চারিদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে,
সূর্য্যদেব সাত রঙের অশ্বের বাহনে ফিরে যান অস্তাচলে,
আমার বাগানে নেমে আসে সন্ধ্যা অত্যন্ত মৃদু পায়ে,
যেন নর্তকী ফিরে আসে ক্লান্ত ঘুঙুর বাজিয়ে।
লাল-সাদা, বেগুনী-হলুদ ফুলগুলো দিনের শেষে ঘুমের বিছানায় ঢলে পড়ে,
পাখীদের কিচিরমিচির আর শোনা যায় না,
নীড়ে ফিরে আসে তারা সব, নিশ্চিন্তে, নি: শব্দে, নির্ভয়ে,
পথ-হারানো একটা-দুটো, অবশেষে ফিরে আসে তাদের শান্তির আশ্রয়ে।


আমি বসে থাকি, কিসের অপেক্ষায়!
সারা দিনের ব্যস্ততা মুছে যায়, অবহেলায়,
সারা দিনের ক্লান্তি বিলীন হয়ে যায়,
চোখ বুজলে ছায়ার মতো ভেসে আসে,
রঙীন ছবির মতো প্রাণোজ্জ্বল এক বহূ দূরের অতীত,
হৃদয়ের সাথী, প্রাণের দোসর,
আমার প্রাণে যে আজও বাজিয়ে যায়
ঝুলনের সঙ্গীত, তারা-ভরা রাতের স্মৃতি।
সে এখনও জেগে আছে আমার হৃদয়ে,
দুই চোখে সাগরের গভীরতা নিয়ে।
তার হাতে জুঁই ফুলের মালা, তার ঠোঁটে স্বর্গ-থেকে-নেমে-আসা অপ্সরার রহস্যময় হাসি;
পৃথিবী দেখেছি আমি, তবু
এখনও আমি শান্তি পাই তার চোখে রেখে চোখ,
তার হাতে রেখে হাত,
বহূ দূর থেকে।


জীবনের সব কোলাহল স্তব্দ হয়ে যায়,
সব আলো নিভে যায় এক এক করে,
সব অর্থ নিরর্থক হয়ে যায়,
শুধু জানি সে আছে আমার প্রতীক্ষায়!
আমি আছি তার।