এসব অনেকদিন আগেকার গল্পো!
যখন আমরা কলেজে যেতে শাড়ী পরতাম,
আর লম্বা চুলে বিনুনী বাঁধতাম!
ভর্তি হলাম মেয়েদের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ কলেজে,
নিয়ে নিজের সবচেয়ে প্রিয় আর পছন্দের বিষয়,
দাদু বললো - তোমার সব আশাই পূর্ণ হয়েছে,
সব পেয়েছো যা চেয়েছিলে!


কিন্তু কলেজে যাওয়ার শাড়ী ছিল তিনটে - সুতির -
একটা হলুদ কমলা পাড়, একটা খয়েরী ডোরা ডোরা,
আর একটা ক্যাটকেটে সবুজ -
ছিল না বেশী পছন্দের,
উপায় নেই, পরতে হতো!


ধোওয়া হতো, ইস্ত্রি হতো নিয়মিত নিজের হাতে,
শাড়ী ইস্ত্রি সময় লাগতো বেশ!
হলো এক কান্ড একদিন!
তিনটে শাড়ী অপেক্ষায় রয়েছে ইস্ত্রির -
জানালার কাছাকাছি একটা ট্রাঙ্কের ওপর!
কলেজ থেকে ফিরে দেখি বিকেলে,
তারা অদৃশ্য!
কারোর প্রয়োজন আমার থেকেও বেশী,
তুলে নিয়ে গেছে জানালার ফাঁক দিয়ে,
জানি না কি ভাবে!
খুব দক্ষ বলতে হবে!


এই হলো সেই তিনটে শাড়ীর গল্প!
তার পর থেকে পরেছি মা আর পিসীর সাদা শাড়ীই অনেকদিন!


আর একটা শাড়ী - খুব হাল্কা গোলাপী, আর লক্ষ্নৌ চিকনের কাজ করা।
মামা উপহার দিয়েছিল মা-কে,
মা-র বয়স তখন চল্লিশের মাঝামাঝি, নিজেকে বয়স্কা মনে করতো,
আমার জন্যে তুলে রেখে দিয়েছিল।
আমি পরলাম - প্রথম দিন কলেজে যাওয়ার সময়ে।
গিয়ে দেখলাম - অন্যদের পাশে সে বড়োই সামান্য,
আমার কাছে যা ছিল মূল্যহীন!


মায়ের একটা বেনারসী ছিল - হাল্কা বেগুনী, রূপোলী পাড়,
মা তো হাল্কা রঙ ছাড়া পরতোই না!
বাবা শখ করে কিনিয়েছিল, দাম দিতে কষ্ট হয়েছিল,
তবুও!
এক বিয়ে বাড়ীতে পরতে দেওয়া হলো আমাকে,
মামাতো দিদি সুপ্রিয়া চৌধুরীর স্টাইলে শাড়ী পরিয়ে দিলো।
কি কান্ড!
ফিরে এসে দেখি - পাড়ের দিকটা বেশ ছিঁড়ে গেছে,
হাই-হিলের কল্যাণে!
মা-কে খবরটা দিতে দু: খ হয়েছিল,
মা কিছুই বলেনি!