কৃপণ পিতার ছিল কৃপণ ছেলে,
পুত্রেরে কহি‘ গেল পিতা মৃত্যুকালে,
‘‘কৃপনশ্রেষ্ঠ নামে খ্যাত বাল্যবন্ধু মম,
মান্য করিও তাঁরে পিতৃব্য সম।
যাইও তাঁহার কাছে লইয়া সময়
শিখিও পন্থাসকল করিতে সঞ্চয়।‘‘
যথাকালে পুত্র গেল পিতৃব্য সকাশে.
সমাদরে পিতৃব্য তারে ঘরে লইয়া আসে।
কহিল,‘‘এক্ষণে সন্ধ্যা সাত ঘটিকা.
দুটি ঘণ্টা সঞ্চয়ের জ্ঞান বটিকা
বিতরিব আমি মুখে, তুমি শুনো কানে–
অনর্থক অপচয় হবে, আলো জ্বলা মানে।‘‘
সুতরাং, ঘরে বাতি নির্বাপিত হইল,
আঁধার ঘরেতে কথা চলিতে লাগিল।
নয় ঘটিকা অন্তে পিতৃব্য কহে,
‘‘সর্ব শিক্ষা সমাপ্ত, বাকী কিছু নহে;
ঘরে আলো জ্বালি তবে,তুমি গৃহে যাও।‘‘
পুত্র কহে, ‘‘তিষ্ঠ কাকা, লুঙ্গি পরিতে দাও‘‘।
পিতৃব্য কহেন, ‘‘আঁধারে কি লুঙ্গিহীন ছিলে?‘‘
পুত্র কহে, ‘‘অপচয় ঘটে আঁধারে লুঙ্গি পরিলে,
পরমায়ু বাড়ে লুঙ্গির খুলিয়া রাখিলে,
অর্থের সাশ্রয় হয় বুঝিয়া চলিলে।
আলো মধ্যে লুঙ্গি করে লজ্জা নিবারণ,
আঁধার ঘরে লুঙ্গি পরিধান নাহি প্রয়োজন।‘‘
পিতৃব্য কহে , ‘‘বৎস, কি জ্ঞান শিখাইলে !
কৃপণ সমাজের মুখ উজ্জ্বল করিলে।
আজি হতে তুমি হইলে শ্রীকৃপণশ্রেষ্ঠ,
তুমি মোর গুরু হবে, আমি তব শিষ্য।‘‘
                    —০—