দরজার ওপাশে চৌকাঠে
দাঁড়িয়ে অদৃশ্য এক ছায়া
লম্বাটে গড়নে, মলিন হাসির
অসম্পূর্ণ বিহ্ববল কায়া।
আজও চোখে ভাসে
সেই মায়াকাড়া চেহারা
চশমার আড়ালে ক্লান্ত দুটি চোখ
বারবার ঝাপটানো চোখের পলক,
খবরের কাগজে মুখ লুকিয়ে রাখা
মা’র গেয়ে যাওয়া
আবদার অগ্রাহ্য করা।
বাবা তুমি হারিয়ে গেছো
অচীন কোন গাঁয়ে,
বাবা তুমি জেগে আছো
আমাদের ভালবাসাতে।


প্রতি সন্ধ্যায় বৈঠকখানায়
আজও ইজিচেয়ার দোলে
এক নির্দিষ্ট সময়ে,
আমি জানি
বাবা, তুমি এসেছো
দেখছো আমায়।
তোমার সিগেরেটের তামাকের গন্ধ
আমার নিশ্বাসে থাকে বন্ধ।



মা আজও রাঁধে সজনে ডাটা
থেমে যায়নি তার অনর্গল মসলা বাটা,
দিনের শেষে কুপির আলো যায় নিভে
মা কাঁদে আঁধারে নিশ্চুপ নিরলে।


কুয়োটা বাঁধা হচ্ছে শ্বেত পাথরে
মা’র আদেশ পালন হচ্ছে অক্ষরে অক্ষরে
অভাব সংসারে বেড়েছে আরও
ফুফুদের উপদ্রব হচ্ছে জড়ো।
প্রভিডেন্ট ফান্ডে ব্যালেন্স খুবই কম
সোহাগের পাশের আশাই
সর্বশেষ সম্বল।


চোখে শুধু অন্ধকার
মা’র দৃষ্টিহীন হাহাকার
প্রয়োজন ছিল কি বাবা,
এভাবে সব ছেড়ে যাবার?
তোমার পড়নের শালটা
অলসতায় জড়িয়ে নেই
সবকিছু তেমনি আছে
বাবা, শুধু তুমি নেই।