(১)
তোমার ঈশ্বর আমার ঈশ্বর চুলোয় যাক
ধর্মের চুলোচুলিতে   মানুষ মানুষই থাক।

(২)
শুনেছি ঈশ্বর থাকেন মন্দিরে আর খুদা থাকেন মসজিদে
খামোকা মানুষ লড়াই চালায় নিজের নিজের ধর্মের জিদে।

(৩)
আমি থাকবো কোন কোরানে কোন গীতায় কোন উপনিষদে!
সবাই আছে মেতে  নিজের স্বার্থ মেটাতে   ধর্মের অজুহাতে।

(৪)
ঈশ্বর খুব খুশি হোন  গুঁজে দিলে মানুষের হাতে ধর্মের দীক্ষা
ঈশ্বরের  চৌকাঠে  দাঁড়িয়ে মানুষ মাঙেন বেঁচে থাকার ভিক্ষা।

(৫)
ঈশ্বর জানেন ধর্ম মানুষকে না দিয়েছে শান্তি, না সততার ছাদ
এখনও মানুষ ধর্মের পেট, খিদের ভেতর খোঁজেন বাঁচার স্বাদ।

(৬)
ঈশ্বর পা রেখেছেন জমিনে, চোখ রেখেছেন আকাশের দালানে  
স্বর্গ মর্ত দুটোয় রেখেছেন  নিজের দখল দালালির  তত্ত্বাবধানে।

(৭)
শুনেছি থাকলে উপোস পেট, ঈশ্বর নিশ্চয় আসেন ঘরে
ঈশ্বরের ভয় অন্ধকারে, তাইসববাতি জ্বেলে রাখি ঘরে।

(৮)
আজ সব দোষ নিয়েছি যদিও  আমার মাথায় তুলে
দু’হাত খুলে সাজিয়ে ঈশ্বরের দু’পায় অনেক ফুলে।

(৯)
যে ফুল ছুঁড়ে মারলে তুমি তোমার দেবতার মুখে
সে ফুল কুড়িয়ে নিয়ে যাও ঘরে থাকবে বলে সুখে।

(১০)
তুমি ঈশ্বর বানাও ভেঙে কোন পাথর
তুমি হৃদয় বানাও  ভেঙে কোন পাঁজর।

(১১)
বুকের পাঁজর বিকিয়ে দিয়ে বাজার হাটে
আনবো ঘরে প্রেম কিনে।
হাতের রেখা বিকিয়ে দিয়ে ভ্যাগের ঘাটে
আনবো ঘরে খুদা কিনে।

(১২)
চলতে ফিরতে মন্দিরের বাজনা শুনেছি
আজানের সাড়ায়  দু’চোখ মেলেছি
কোন কোলাহলে স্বর্গ তোমার
শুধু মায়ের কোল দেখেছি ।

(১৩)
না দিলেও সাড়া তুমি আসতে পারি
জেনো আমি তোমার কাছে ।
শিশু সুলভ ঘুম আমার কারো কোল পেতে
সঙ্গে থাকার ভিড়ের মাঝে।

(১৪)
ছাড়াছাড়ির মুহূর্ত গুলো সহজ করে তোলো
ভেঙে সাঁকোর যত পার ।
পারো যদি আমার স্বপ্নে এসে কিছু কথা বলো
ঘুমের গন্ধে একাকার ।

(১৫)
তোমার খাতিরে আমি
আমাকে করে চলেছি নিত্য ক্ষয় ।
তুমি আছ জেনে আমার শরীরে আর কি
কোন সময়ের ঋতুর আছে ভয়!


(১৬)
দুনিয়া চুলোয় গেলে যাক। ভুল রোদবৃষ্টি রম্য পাক।
তোমায় বলতে পারি না তুমি আমার পর ।
গাছের ছায়া গাছে জড়িয়ে আছে নিশ্চুপ নির্বাক
তোমার ডেরায় খুঁজবো ভালোবাসার শিকড়।

(১৭)
নিজেকে এতো শীঘ্র এতোটা সহজে নিজের
আদল বদলে নিতে পারি,
কখনো ভাবেনি নিজের কাছে
আমি নিঃসম্বল মুফলিস হতে পারি
ক্ষমা প্রার্থী সময়ের গুমোট আয়নায়।

(১৮)
একটু পাঁচ ফোড়ন দাও
আমার জীবনের রান্নায়।
একটু অশ্র্রর জ্বলন দাও
আমার অভিমান কান্নায়।

(১৯)      
কারো আশ্রয়ের পান্থশালায়
যদি কষ্ট কাঁদে নিঃশব্দতায়।
দু’চোখ আমার উজার করো    
ভালোবাসার স্পর্শ নির্দ্বিধায়।        

(২০)                  
কিছু কথা কিছু আলাপ দু’চোখ ভূলিয়ে রাখে।    
কিছু কথা খোলা হলে বুকের ভেতর  
কান্নার বর্ষা ডুবিয়ে রাখে।    

(২১)
আমার সব সময় দিয়েছি তুলে তোমার হাতে
একটু সময় করে দেখলে না আমায়
কত ভুলের ধুলো ছড়িয়ে ছিলো আমার হাতে।

(২২)
তুমি থাকো দু’হাত খুলে আমার বুকে
যদিও লোকের পৃথিবী জানি কাঁচের।
প্রেম থাক জোড়া আঠালো আঠার সুখে
বাঁধো ঘর শিরদাঁড়ায় অন্য ধাঁচের।

(২৩)
কত যে অবাধে ধূলভুল লেগেছিলো
আমার দু’পায়।
যেতে যেতে রোদের কাঁটা বিঁধেছিলো
আমার দু’পায়।
একটু দেখার তাগিদে দাগ লেগেছিলো
আমার ওড়নায় ।

(২৪)
রোদের প্রেম দেখেছি ছায়ার গভীরে
বৃষ্টির প্রেম দেখেছি  মেঘের গভীরে।
ফুলের প্রেম পুড়লে   গন্ধের গভীরে
হাজার বসন্ত দেখেছি প্রেমের গভীরে।

(২৫)
তোমার খোলা চুলে কত রাত গোপন ছিল
লজ্জা শরম সুধায়।
নিঃশ্বাসের গল্প গানের দোলাচলে ঠোঁট ছিল
অবাধ প্রেম ক্ষুধায়।

(২৬)
যে দিন উড়লো পাখি যে ঘরের চাতাল একলা করে
ভলোবাসার ভেতর একলা হৃদয় একাই গুমরে মরে।

(২৭)
তোমার নীরব সরব চাওয়ায়  
ভিজিয়ে আমার সব সকাল সন্ধ্যা রাত।
লিখলে আমার শরীর মাদকতায়
তোমার দু’হাতে নিয়ে ঠোঁটের দোয়াত।

(২৮)
চোখে চোখে রাতভোর  শিশির গুছিয়ে রাখি ।
বিন্দু বিন্দু জলের ফোটায়  হৃদয় বিছিয়ে রাখি
একদিন জলের গভীরে সাগর খুঁজে পাবো জেনে
যাতনার আস্তিনে দু’হাত আমার বাড়িয়ে রাখি।

(২৯)
আমার সব সকাল সন্ধ্যা রাত ছিলো
যদিও সবই তোমার ভাবনায়
আমার বাঁচার ইচ্ছে মরণের ইচ্ছে
আজও সবই তোমার কামনায়।  

(৩০)
আমার ইচ্ছের কোনো আবদার ছিলো না
তোমার কাছে কিছুর অজুহাতে ।
যদিও আমার ঠোঁট তৃষ্ণার তাগিদে শুধু হাত
রেখেছিলো তোমার হাতে হাতে।


(৩১)
যখন তুমি দেখো আয়না, ভুলের মিথ্যে সরিয়ে রাখো
ভালের টিপ বদলে বদলে আঙুলে লজ্জা লুকিয়ে রাখো।

(৩২)
যে উঠোনে রোদ আসে না ,বৃষ্টির দোলায় গা ভাসে না
সেখানে সঘন ছায়ার মঞ্জুরি কি করে ফোটাই বলো না।

(৩৩)
কিছু স্বপ্ন সাকার হলো আর কিছু গাঁথা সমেয়ের পেরেকে
ভাগ্যের জোর কার হাতে গোজা     অধিকারের পেরেকে

(৩৪)
আমার উদাস চাওয়া তোমাকে ভীষণ টানে
যেন পাগল প্রেম একলা ছাদের পিছুটানে
অনেক দিনের চেনা আকাশের আলোর গানে
যেন অন্ধকার একলা থাকার অভিমানে।

(৩৫)
কেউ না যায় ফিরে      রেখেছি দুয়ার খুলে
হোচট না লাগে বলে  রেখেছি চৌকাঠ তুলে
যদিও কাঁচের শহরে কাঁচের ঘর
ভালবাসার ছাদ     ভাঙতে পারে অল্প শূলে।

(৩৬)
সবুজ স্বপ্ন সবুজ থাকবে বলো  আর কত দিন
দীনতার কাঁটার থেকে পাবে    পার কত দিন।

(৩৭)
হৃদয়ে জখম লাগিয়ে জানি বসন্ত চলে যায় নীরবে
কিছু স্মৃতির মেঘ-বৃষ্টি যায়  কেঁদে আজও নীরবে।

(৩৮)
যে মা আদরের দোলায় ভরিয়ে রাখে সন্তান সন্ততির সুখ
সে মা পড়তে জানে না গুনতেও জানে না নামতার মুখ।

(৩৯)
পুরোনো বৃক্ষ যেন আজও আগাছা বৃদ্ধের মত
এখনো টাটকা হাওয়া জড়িয়ে ফুলের গন্ধ যত।

(৪০)
আমার দুচোখ আমার সুখ শান্তি, ছিলো তোমার ইচ্ছের ফেনায়
হঠাৎ ছেড়ে দিলে আমার হাত,বলো তোমার কি ইচ্ছের কেনায়।

(৪১)
ঘুম ছাড়া দীনতা রোজ শুয়ে পড়ে ফুটপাতের সড়ক কোনায়
আমি তুমি রাংতায় মোড়া ঘুমের পিলে আজও আছি দোটানায়।

(৪২)
যে ঘা শুকিয়ে গেছে আজ শুধু ভালো বাসার মলমে
সে কথা কোনদিন ধরোনা  তোমার কাগজে কলমে।

(৪৩)
যেমন এ কিনারা ও কিনারা একই নদীর দুই ঠিকানা
তবু আলাদা আলাদা সঙ্গে থাকার ভীষণ জোড় টানা।

(৪৪)
এখনো তুমি খুদা আকাশে মুখ লুকিয়ে
এসো মানুষের রক্ত জিনে
এখানে সততা বিকিয়ে যায়
জলের দামে দিনে দিনে।

(৪৫)
এখনো ধরে আছি যত উষ্ণ বালি আমার হাতে
কোন ঢেউ এসে ফিরেছিলো আকুল পারা  
কোন কোলাহলে পড়েছিলো তোমার সাড়া  
অবাধ নিঃশব্দতায় জলের বেড়ি তোমার হাতে ।

(৪৬)
যেতে যেতে পড়িয়ে দিলি, আমার পায়ে তোর ফুলের বেড়ি
ভালোবেসে না হয় বলেছি, কাল হবে আমার আসতে দেরী।


(৪৭)
ঘর লাগোয়া তোমার সরোবরে
তুমি সারলে স্নান খুব করে
পারে এসে বাঁধলে তোমার চুলের গোছা
দু’হাত তোমার লজ্জায় ধরে ।

(৪৮)
দু’চোখ আমার জানালায়
নিয়ে আবোল তাবোল ভাবনায়  
নিঃসংকোচে আমার গা ভেজায়
অগোচরে সম্প্রীতির দেখার ফেনায় ।

(৪৯)
মনখারাপের দিনগুলো ভরো না শরাবের বর্ষায়  
মেঘের কাছে বৃষ্টি আছে জেনে মরো না ঈর্ষায় ।

(৫০)
ফুল  সুন্দরতম জখম
ফুল আরামতম মলম

(৫১)
ঘুম ছিল আমার জড়িয়ে স্বপ্ন তোমার
শরীর ছিল আমার জড়িয়ে কষ্ট তোমার ।

(৫২)
যা  হারিয়েছি  যা  পেয়েছি  নিয়েছি  আবার খুঁজে
যে গিয়েছে যে ফিরেছে  করেছি গ্রহন আবার বুঝে ।


(৫৩)
কোন বাধায় ছিলো বাঁধা তোমার দু’হাত
গোটা দিন গোটা সন্ধ্যা নিয়ে বিবাদ ।
কোন বন্ধুর সখ্যতা তোমায় দিয়েছিলো আঘাত,
কোন রোদের আকাশ দিয়েছিলো পোড়া ছায়া,
কোন চাঁদ দিয়েছিলো দাঁত কাঁটা আলোর মায়া
ঠেকায় পড়ে বেলুন ফোলানো উৎসবী রাত্রি।


(৫৪)
শুকনো ফুলের গন্ধে তখন ও হৃদয় ভরে ছিলো
তোমার দু’হাতের আদর আমার হাতে লেগেছিলো
মনখারাপের দিন গুলো অবাধে মনে পড় ছিলো
আর নতুন করে তোমার সঙ্গ ভালো লাগছিলো ।

(৫৫)
আমি কাঁচা মাটি জানি তোমার হাতে
তুমি আমায় খেলার পুতল বানাও
যেমন খুশি তোমার ইচ্ছের অজুহাতে ।

(৫৬)
কোন মায়ায় বাঁধলে আমায়
চোখের পাতা আমার সরে না
কোন হাওয়ার ঝনত্কারে
ঘুমের পলক আমার নড়ে না।

(৫৭)
চোখের মধ্যে ছিলো, বুকের ভেতর হাতড়ে দেখলে না তুমি।
নদীর মধ্যে ছিলো, সাগরের বালি হাতে নিয়ে দেখলে না তুমি

(৫৮)
রেখেছি  বাঁচার আয়োজন গুছিয়ে
রেখেছি  মরণের প্রয়োজন লুকিয়ে
তোমার নজর লেগেছে
জেনেছি নজরের ব্যাকরণ
ভালবাসার গভীরে দু’চোখ ডুবিয়ে।

(৫৯)
আমি নিজের কাছে নিজের হয়ে সব দিন গুছিয়ে থাকি
নিজের অশ্রু জলে নিজের কান্নায় চিবুক ভিজিয়ে রাখি
সব সাঁকো পার করে  এসেছিলো নদী সাগরে
এখন দু’চোখ আমার  সরিয়ে রাখি

(৬০)
আবার আমায় মাটি করো
তোমার ইচ্ছে মত গড়ো
আমার দোষ ভুল ক্ষমা করো
তোমার ভালবাসার ছোবলে
আবার আমায় পাগল করো

(৬১)
যদি মরণ ঘুমায় মরণের কোলে এসে
বন্ধু কাটাবি জীবন কি ভালো বেসে
কোন পাখি পারে আকাশ ফিরিয়ে দিতে
কোন জান পারে বাতাস ফিরিয়ে দিতে

(৬২)
তুমি আসবে ফিরে আছে আমার জানা
এখানে শুকনো মাটির জমিনে
যখন রোদের কাঁচে ছিড়বে পাখির ডানা
মেঘের মুখর ঝড় বৃষ্টির গহিনে।

(৬৩)
আমি অকারণে কষ্ট পাই
বৃথায় কারণ খুঁজে যাই
ভাঙতে পারে কাঁচের হৃদয়
বাড়িয়ে দিলে আঙুল বলে হীরের আংটি চায়।

(৬৪)
ফুল ফোটে হাজার জখম লুকিয়ে বুকে
দোহাই তোমার আমায় ভুল বোঝো না
আঁধার গলে শিশির জলে ভোরের বুকে
দোহাই তোমার  আমার  ভুল ধরো  না।

(৬৫)
যেতে যেতে ছেড়ে দিলে কখন যে আমার হাত
এখন তোমার ভাবনায় কাটে আমার দিন রাত
তোমার ভাবনার সুতোয় শুকনো ফুলের গন্ধ
এখনো লেগে আছে নিয়ে আমার সকল হাত


(৬৬)
না মরতে চেয়েছি না বাঁচতে চেয়েছি
শুধু তোমার কাছে একটু প্রেম চেয়েছি।


(৬৭)
চোখের মধ্যে ছিলো, বুকের ভেতর হাতড়ে দেখলে না তুমি।
নদীর মধ্যে ছিলো, সাগরের বালি হাতে নিয়ে দেখলে না তুমি

(৬৮)
তোমার ভেতর তুমি থাক, আমার ভেতর আমি থাকি
দুজনের ভেতর একি হৃদয়, সরব দোলার দোলায় থাকি
নিয়ে শরীর দুজনের মাখা মাখি

(৬৯)
আমার মাটি তোমার আকাশ
এক দুজনের চোখে ভুলিয়ে রাখি।
আমার বৃষ্টি তোমার বাতাস
এক দুজনের বুকে ডুবিয়ে মাখি।

(৭০)
আমি অন্ধকার হাতড়ে খুঁজে নিলাম
নিঃশব্দতার আলোর বাতি
আমি ফুলের কাঁটাতারে খুঁজে নিলাম
সহজ সুখের হাজার সাথী ।

(৭১)
আজ মেঘের বর্ষা হোক
কাল রোদ্দুরে শরীর ভেজাবো
পদ্ম পাতার শয্যা হোক
কাল তৃষ্ণায় ঠোঁট ভেজাবো।

(৭২)
এমন কিছু স্বপ্ন থাকুক আমার ঘুমের দোলে
সঙ্গে জাগে সব পৃথিবী আমার চোখের কোলে।

(৭৩)
হৃদয়ে জখম লাগিয়ে জানি বসন্ত চলে যায় নীরবে
শুধু কিছু স্মৃতির মেঘ বৃষ্টি   যায় কেঁদে  নীরবে  ।

(৭৪)
আমার চোখের পানি আমায় দিয়েছে প্রেম অনেক খানি
তোমার খেয়াল তোমার কষ্ট যদিও রেখেছি করে রানী ।

(৭৫)
আমার কবিতা আমার নিজের কথা জানি
কবিরা পড়েন  না  বানানো কথা বলে
পথিক জেনে দিয়েছেন তৃষ্ণার মুখে পানি
টুকে রাখেন আগামী দিনে লিখবেন বলে ।


(৭৬)
এখন ধরা পড়ে না আমার মুখ আর কোনো আয়নায়
আমি সুখে আছি বলে তোমার ভালবাসা নিয়ে যাতনায়।

(৭৭)
যা হোক আমি তোমার খিল হয়ে আছি তোমার দরজায়
তোমার ঘরেরে বাইরে রাখো বা তোমার শয্যার মর্যদায়।

(৭৮)
আমি জানি  চিরদিন মনে রাখবে লোকে আমাকে
তোমার ভালোবাসা কত দিয়েছিলো কষ্ট আমাকে।

(৭৯)
আমার অনুরোধ খুদা  আবার আমায় মাটি করো
তোমার প্রেমের জখমে আমার প্রেম খাঁটি করো।

(৮০)
নিজের দুঃখ নিজের হাতে কাটি    আর সুখের মুখ খুঁজি
নিজের ঠিকানা নিজের কাছে রাখি আর ঘরের খিল খুঁজি।

(৮১)
তোমার ভালোবাসা রেখেছে আমায় আজও সহজ করে
আছি নিয়ে তোমার মান অভিমানের সকল গরজ ধরে।

(৮২)
নীরব সব সন্ধ্যার আকাশে আজ  মাখিয়ে আলোর সরবে  
খুঁজবো প্রেম এক দুজনের বন্ধ চোখের বন্ধ ঠোঁটের তলবে।

(৮৩)
অনেক নামের ফুল সাজিয়ে রাখো তোমার খোঁপার চাতালে
যেন অরণ্য চাঁদের কাঁথায় আমার কাব্যগাঁথা লজ্জার আড়ালে।

(৮৪)
তোমার সিক্ত পলকের হাসির ঝিলমিল   রোদ্দুরে বর্ষা নামার মতো
তোমার স্নান ঘরে ঝাপসা কাঁচের গায়ে  সাগরের ঢেউ লাগার মতো।

(৮৫)
সকালের পাখি ছুটে আসে অল্প কিছু দানার  লোভে  অন্য বাড়ির বারান্দায়
ছুটছি সবাই ক্ষুধার বোঝা নিয়ে খুঁজতে টাকাকড়ির রাংতা হাড়ভাঙা ধান্দায়।

(৮৬)
আমার ঠোঁটের পাতায় তোমার চোখের পাতার যখন পরশ লাগে
তোমার কোন অনুরঞ্জনে আমার সারা শরীরে নেশার বিপ্লব জাগে।  

(৮৭)
আমার নাম লিখোনা তোমার ঠোঁটের রঙে বা কাজলের দাগে
পর্দা ফাঁস হতে পারে
আগুন জ্বলে, পুড়ে ছাই গোচর প্রেম কোন রাগে
লোকের ঈর্ষা হতে পারে।

(৮৮)
জীবন উদাস হলে  বাসি ফুল ফেলে দিও
ভোরের ফুলদানিতে নতুন ফুল ধরে নিও।

(৮৯)
খুশি কম হোক বা বেশী হোক
জীবন থাক তোমার কাছেকাছে
আসে পাশের বাড়ি সুখী হোক
মরণ থাক চুলোর গাছে গাছে।

(৯০)
দু চোখে চমক লাগে  ঘুমের শয্যায়
দু’হাতে গমক লাগে  স্বপ্নের  লজ্জায়।

(৯১)
তোমার খোঁজে হারাই আমার বন্ধু-লাগা উষ্ণ বৃষ্টির দিন
সজাগ ঘুম ক্লান্ত শরীর রাতের কাঁটায় দু’চোখ দৃষ্টি হীন।

(৯২)
তোমার আঠারোর আঠালো আঠা এখনও লেগে আছে আমার শরীরে
আমার চুল সাদা তবু প্রেম এখনও রঙের আঁচ নিয়ে আমার শরীরে।

(৯৩)
আস্ত সকাল দেখলাম    আমার ঘর লাগুয়া তোমার ঘরে
সমস্ত আকাশ দিলো  তোমার স্পর্শ আমার দু হাত ভরে।

(৯৪)
আমার সকল দুঃখ সকল ব্যথা ভাঙায় যদি তোমার ঘুম
হাওয়ার ভেতর তোমার চুড়ির বাজনা বাজে ঝুম ঝুম।

(৯৫)
ফুলের বর্ষা ঝরাই আমি তোমার প্রতীক্ষায় যদিও অকারণে
রোদ বৃষ্টির মাঝখানে দাঁড়িয়ে তুমি নতুন লজ্জার আভরণে।

(৯৬)
তোমার চুপিসাড়ে ক্রমশ কথার সরোবরে ভিজবো সারা রাত
নতুন নতুন গল্প গানের   তন্দ্রার প্রপাতে  নাইবো সারা রাত।

(৯৭)
তোমার যত বলার কথা বলো চুপিসাড়ে
তুমি শুধু একাই তোমার সাথে
আড়াল পেতে শুনি আমি আর প্রহর কাটে
আমার ভুল ভাঙার অন্তরাতে।


(৯৮)
তোমার মোমের শুভ্র আলোর গভীরে আমায় নরম করো
গাছের পাতার রম্য ছায়ার গভীরে তোমার স্পর্শ ধরো।

(৯৯)
নতুন সকাল নতুন রাত  নতুন আলোর নতুন সুখ
যে গ্যাছে সে যাক কি হবে আর আঁকড়ে পুরোনো মুখ।

(১০০)
নষ্ট ধুলোর  হাওয়ায়।নষ্টজলেরনাওয়ায়  
নষ্ট অন্যকোন চাওয়ায়  নষ্ট হবোনা আমি।  
দেখতে দেখতে তোর মাটি তোর আকাশ বাকি দূর অবশেষ
কষ্টেসৃষ্টে তোর কাছে পৌঁছে যাবো আমি
তোর বুক যে পবিত্রার একটি দেশ।থাকবো ভালো শেষমেশ ।

(১০১)
আমার কলমের অন্ধকারে আলোর দিশা পেয়েছি।
আমার কবিতায় শব্দের বুকে হৃদয় খুঁজে পেয়েছি।
আমার অব্যক্ত হৃদয়ে স্মৃতির দৃশ্যযাপন দেখেছি।।
দু’চোখ মেখে শব্দের চাঁদ সমস্ত আকাশ পেয়েছি।

(১০২)
আমি আছি। তোমারই কাছাকাছি।
ছুটে আসি ছুঁয়ে নিতে তোমার দু’চোখের নীলাঞ্জন
আকাশের শামিয়ানার অন্দর মহল খোলা আমন্ত্রণ।
শূন্যতা ভেঙে ভেঙে আজ পেয়েছি পূর্ণতার অভয়  
নিটোল রাত।নিটোল দিন। তোমার পরিচয়।

(১০৩)
একই আকাশের নীচে
কত গাছ কত ক্ষেত কত আখোলা বসতির কোলে
প্রতীতির অন্তর্জাত সকালদেখলাম।
মায়ের অঞ্চল ছেড়ে শহরের হাওয়ায় বাড়িরকোন্দলে  
প্রদীপ্তির আলোয় দুর্ভিক্ষ দেখলাম।

(১০৪)
দেখি না একটিও প্রজাপতি উড়তে হাওয়ায়
একটিও  ফুল ফুটতে  গন্ধে আকুল চাওয়ায়
তবু যে বসন্তের ছোঁয়া বুকের ওমে অনুরাগ জমে
তোমার হাতে ধোঁয়া ওঠা ফ্যানা ভাতে ক্রমে ক্রমে।

(১০৫)
যতদূর মনে পড়ে
ফোটেনি একটি ও ফুল সেদিন
করেনি ওড়াউড়ি কোনো প্রজাপতি দূর্বাঘাসে  
পড়েনি চোখে জ্যোৎস্না-গুমর নক্সা আকাশে।

তবু ছিল এক বুকভরা এক অরণ্য ভালো থাকা  
স্পর্শে স্পর্শে কোটি কোটি অনিন্দ্য হৃদয়  মাখা
অবিস্মরণীয় বসন্ত দিন।
(১০৬)
মানুষ মানুষের আড়ম্বরে জীবন্ত ঈশ্বর
ঈশ্বর সৎকার সংস্কারে অনন্ত চরাচর।

(১০৭)
একান্তে ভালোবেসে যাবো জন্ম-জন্মান্তর তোমায়
অশান্ত হাত বেঁধে ঈশ্বরের দিব্যি-শিকলের দোহায়

(১০৮)
সততার সলতে পুড়িয়ে ঘরদোর আলো রাখাটাই ভালো।
সততার চিতার স্তূপে শ্বাস টেনে বেঁচে থাকাটাই ভালো।