তবু সেদিনের কথায় হাসি পায়!


শংকর হারিয়েছে কালাহারিতে,
কোন ফরাসি আত্তেলিও গাত্তি
বহু বছর আগে-জমিয়ে গেছে জল‌‌
অচেনা পথিকের উদ্দেশ্যে...
সর্বহারা প্রাণে সেই শ্যাওলাধরা জল
জুগিয়েছিল রসদ,প্রাণের রসদ।
ছেলেবেলায় কতবার সেই কালাহারিতে হারিয়ে গেছি,পেয়ারাগাছের তলায় বসে;
বিকেলের হাওয়া যখন জলের সাথে কথা বলত,
সে ধ্বনি আমার মরিচীকা মনে হয়েছে কতবার।
আজ আর তা ভাবিনা।
আমের ডালে মৌচাকটাও তো হয়না এখন আর...
আগে হত,আশ্বিনের শেষে মধু পাড়ত বাবা
ঝাঁ-ঝাঁ করে উঠত সমস্ত মন।


শরতের দিন আসছে,
সব শান্তি উবে যাবে অশান্তির বাণীতে;
অন্যায়ের ক্ষমা বাক্য দিকে দিকে উচ্চারিত হবে;
মঙ্গলের দ্বারে স্হাপিত হবে অমঙ্গলের ভীতি।
তবু সেদিনের কথায় হাসি পায়!
যেদিন জাদুকর এসেছিল গ্রামে
সম্মোহিত হয়েছিল সবাই।
কালাহারির তাপে আমি, কেবল পুড়েছিলুম পেয়ারাতলায়,একটা শব্দ শুনতে পেলুম!


আমার চাঁদের হাটে পাথরের গর্জন উঠেছে রণরণিয়ে,থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে
ফুলগুলো ঝরেছিল মাটিতে।
আমার বসন্তের বাউল আর গান ধরেনি তারপর।
আজ জোৎস্না রাতের মায়া তলিয়ে গেছে ঝিলের
টুকরো ইঁটের স্তুপে।


শরতের দিন আসছে,
পেঁজা তুলোর মেঘ ছুঁয়ে যাবে গম্বুজের শিখরগুলো,
দু একটি দোয়েল শালিখ,একটি-দুটি প্রজাপতি
সাজানো বাগানে এসে জুটবে।
ফোয়ারায় স্নান সেরে উড়ে যাবে সীমান্তে;
সাজ পোশাকের উগ্র আতর বাতাসে ছড়িয়ে যাচ্ছে,
পালাতে চায় ওরা।


সন্ধ্যা হয়ে এল,আরতির শঙ্খ ঘন্টা বাজবে
ধূপের ধোঁয়া,কর্পূরদহন,মন্ত্রোচ্চারণা,
সব মিলিয়ে ব্যাপারটা ভীষণ জমজমাটি।
আলোর খেলায় দেওয়ালগুলোর আঁকিবুকি যেন প্রাগৈতিহাসিক,কি বলে যায় ওরা?বলে,
যেদিন স্বর্গদানের থালা প্রণামি বাক্সে পরিণত
হল,আমরা মাটির থেকে উঠে এলাম পাথরে।
স্বয়ম পূর্ণার চরণ পিষে লাভের অঙ্ক কষলে
সোনার বেদী রইল পড়ে ফাঁকা।


শরৎ দিনের শেষ পূর্ণিমাতে দেখেছিলাম,
পূর্ণচাঁদে গ্রহণ লেগেছে,
আমার চাঁদের হাটে দহন লেগেছে,
কিছুই করিনি সেদিন,করার কি বা ছিল?
আলোর গতিতে বিবর্তিত হয় যে-সময়
তাই শিখরের ত্রিশূল থেকে গোধূলির আলো যখন ঠিকরে আসে চোখে,অবনমিত পলকে হেসে উঠি।
সে বিবর্তন মানতে পারিনি আজও...
তাই হেসে উড়ি‌য়ে দিই,ওই যেমন করে
উড়ছে ধ্বজা,মোহের ধ্বজা ।।