পলাশগাছে দুটি পাখি
"কাকা" আর "তুয়া"।
কাকার মাথায় মোরগ ঝুঁটি
তুয়ার পেখম রঙটি খাঁটি,
দুইয়ে মিলে বলত কথা
খায় দায়, নেই মাথাব্যথা।
হঠাৎ একদিন হল কি
একটা হুলো মেনি
কান খুঁচিয়ে গেল বলে
ভিন্ন তোদের জাত,
ফের যদি একজোট হোস
তোদের মাথায় ধরবে বাত।
ব্যস! আর কি বন্ধ কথা
সেই গাছেতেই থাকে দুজন
নেই তো তবু চোখের দেখা।
হায় রে, তুয়া কেঁদেই মরে
কাকা খানিক বুদ্ধি ধরে,
বলে, "নতুন কিছু করি
আমার তুয়ার দূরত্বটা মাপি।"
গাছের তলায় থাকতো সেথায়
এক গণিত পাগল লোক,
সব কাহিনি শুনে বলে
"মাপতে হবে দূরত্ব
হোক হোক হোক!"
একগুচ্ছ সাদা কাগজ
উট পেনসিল নিয়ে,
বসল সে কশ্ তে হিসাব
ইড়িং তিড়িং ধিয়ে।
"উম্ ম্!
পিথাগোরাস আঁটবে না ঠিক
সম্পাদ্যে খাটবে না,
তার চেয়ে বরং স্থানাঙ্কে যাই;
একমাত্রিক হলে পরে
হুম্ ,দুয়ে দুয়ে চার আর তিন!
আচ্ছা তোরা এক ডালে থাকিস?
কাকা বলে, "নাতো ও উপরে"
তবে তো একমাত্রিকে মিলবে না!
দেখি!
দ্বিমাত্রিকে বিন্দুদ্বয়ের দূরত্ব
উম্ ম্
কি মুশকিল অক্ষদ্বয়ের অবস্থান নাই ?
নাই কেন্দ্রের ঠিকঠিকানা
তোরাও এত চলিস কেন ?
চুপটি করে দাঁড়া
বলছি, এমন করলে খেলব না।
দ্বিমাত্রিক বাদ, বরং ত্রিমাত্রিকে যাই"
এই না বলে অনেক এঁকে
অঙ্ক করে হিসেব টুকে
বলল শেষে,
"নাহ্ না ! এ যে দেখি গোড়ায় গলদ
চুপটি করে দাঁড়া কাকা
এবার কিন্তু রাগছি আমি।
বরং ছয়মাত্রিকে দেখি এবার"
যেই না ভাবা অমনি কাজ
চলছে হাত  খেলছে মাথায় বাজ ,
সেই ঝিলিকেই মধ্যে চোখে
দপ্ করছে আলো,
দূরত্বটা হলে মাপা
বেশ হবে জমকালো।
কিন্তু হায় রে ওদিকপানে
বন্ বন্ বন্ ঘুরছে কাকা
চিহ্ন বহর দেখে,
তুয়া গেল অক্কা
কি হবে তাই ভেবে।
যখন তুয়ার জ্ঞান ফিরল
গণিত কাকু ঠায় ,
হুলো এসে হিসেব দেখে
ছানাবড়া চায়।
এত কান্ডের মাঝে কাকা
ভুলেই গেছে ছেদ,
তুয়াও গেছে পাশটি ঘেঁষে
নাইগো মনে খেদ!
"উত্তরটা যাচ্ছে মিলে
হ্যাঁ হ্যাঁ! এই ফলটাই পেয়েছি
দুরত্বটা আপেক্ষিক,
হিসেবে তাই তো গুণেছি।
থাক রে তোরা কাকাতুয়া
শূন্য অঙ্কফলে
কাটবে জীবন সাত সতেরো
ভরবে খুশির দোলে
ওরে হুলো আয় রে বাবা
অঙ্ক শেখাই তোকে;
(যেতে যেতে)
"সূক্ষ্ম মগজ নেতি গতি
ঋণাত্মকে ইনফিনিটি
ধ্বংসাত্মক সমাপতন
সাদা পর্দায় কালো বিন্দুর মতন
জানিস অঙ্কটা?"
"না"
"আচ্ছা সহজ প্রশ্ন করি, বল দেখি
পৃথিবী কয় মাত্রিক?"
"জানি না"
"আচ্ছা বল !পৃথিবীতে কয়টা চলরাশি
আর কি কি?"
"আমি তার কি জানি"
"কি কি ধ্রুবক সেটা বল!"
"হে হে..পারব না স্যার"
"উফ্, তুই একের নামতা বল....."