সেদিন বাড়ি ফিরে দেখি,
সবাই মিষ্টি হাতে বসে আছে
আমার ডাক এসেছে ,বিদেশ যাওয়ার ডাক
ভেবেছিলাম বলব তোমার কথা,বলতে পারিনি___
রঙিন স্বপ্ন,ভবিষ্যতের হাতছানি বড়ো মনে হয়েছিল তোমার থেকেও।


এসপ্ল্যানেডের মোড়ে শেষ দেখা আমাদের
একবার মনে হয়েছিল ক্লান্ত তুমি,
জিজ্ঞেস করিনি,নিজের কথাই বলেছিলাম সেদিন।
...ফিরলাম যেদিন
সবার আগে গিয়েছিলাম তোমাদের বাড়ি,
দেখি তালা বন্ধ।
ভেবেছিলাম লাল পাড় শাড়িতে এ বাড়িকে চির বিদায় জানিয়ে চলে গেছ;
অভিমান হয়েছিল খুব।


____ এতদিন পর কি বা বলতাম ওকে;
তাই আবারও নিজের কথাই বললাম,
বড়ো ইচ্ছে হচ্ছিল ওর জীবনকাহিনিটা জানতে
একটা অহংকারও ছিল মনে,
ও কিন্তু চুপ করে রইল।


মাটির দিকে চেয়ে বসে আছি,
এমন সময় ডাক আসল "মা",
মুখ ফিরিয়ে দেখি,
সেই মুখ,সেই চোখ,সেই ঠোঁট
একুশ বছর আগের সেই লাস্যময়ী প্রাণচঞ্চল মেয়েটা
আমার চোখের সামনে দাঁড়িয়ে,
...বুকের ভেতরটা ধড়াস্ করে উঠেছিল,
লাবণ্যর হাত দুটো দুহাতে চেপে ধরে প্রশ্ন করেছিলাম ওকে "এ কে?"
নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ও বলেছিল "আমার মেয়ে"।
কেন জানিনা শব্দদুটো কাঁটার মতো বিঁধেছিল আমার বুকে।


ঘোর যুদ্ধের দিনে,বল্লমহারা সৈনিক আমি
ঢাল গিয়েছে ভেঙে আজ
বিদ্রোহের পূজারী তুমি
আজও আছ আকাশের ধ্রুবতারাটিকে সঙ্গে নিয়ে,
সেই অকাল বসন্তের কলিটিকে যত্নে বুকে করে!
আমি ভাবনাগুলো দুমড়ে মুচড়ে ডাস্টবিনে ফেলেছিলাম তিনটে বছর
তুমি সত্যটাকে করলে গ্রহণ।
...জানো, ফিরে এসে যাইনি তোমার বাড়ি,সাহস হয়নি,
মিথ্যে দিয়ে সাজানো এ জীবনে এক তুমি ছিলে সত্য
আমার "মাধবীলতা"।
আমার তো নও! তুমি এ পৃথিবীর।


পুরোনো ঝিনুক ক্ষয়ে ক্ষয়ে শেষ হয়ে যায়,
মুক্তটার কি হয়?
সে অক্ষত থাকে চিরকাল ,
সে যে লাবণ্যময়,আসমুদ্র নীলের মাঝে
জ্বলজ্বল করে
তার অন্তরের স্বচ্ছতায়,
মননের কাঠিন্যতায়,
আবেগের অশ্রুফোঁটায় ।