রাত দুটো কুড়ি
শীতের হাওয়া বয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝে ঝিরঝিরে বৃষ্টির কণা গায়ে মেখে
বিদ্যুতের আলো নেই,
চাঁদ নিয়েছে অন্যায় ছুটি,
দুদিন বাদে পূর্ণিমা।


আমি ছানাবড়া চোখে বেড়ালের মতো চেয়ে আছি,
যে বেড়ালটা দাপাদাপি করছে আটপৌরে চালে
ওরই মতো,
ঘুম নেই।
এই ভরা রাতে করি-কি-করি-কি?
উঠে আসি টেবিলে
একজোড়া মোমবাতি জ্বালাবার চেষ্টায় মিনিট দশ পার,
হাওয়া এসে ফুঁ দেয় যতবার জ্বালি
হার মেনে অবশেষে বসলাম আঁধারে
ডায়রিটা খুলে,
ভাবছি কি-লিখি-কি লিখি
চাদরের খুঁটে টান.....


গুঁড়ি গুঁড়ি আলোর দানা
ধরতে চোখে কষ্ট,
আবার এসব টানাটানি!
কিন্তু...
রাতের ঘরে পিছনে তাকাতে নেই,রূপকথা বলে।
আমি তাই মন দিলাম ডায়রিতে।
দু চার লাইন লিখি, আর হিজিবিজি কাটি,
যেন এইমাত্র শব্দজটে আটকে গেল শ্বাস।
এমনি করে মিনিট সাতেক
বৃথাই কাটাকুটি।
থমকে চেয়ে জানালা পারে ,যেন ব্যর্থ বিরহী নিশাচর কোনো সুলুকসন্ধানে ব্যস্ত,
সেখানেই সুখী লেবুপাতা গন্ধে সাজছিল শীতবৃষ্টিতে নেয়ে,
হঠাৎ দেখি একটা ছায়া সরে গেল...


আমি চোখ ফিরিয়েছি টেবিলে
ধবধবে সাদা পাতায় এতক্ষণে আনমনে কেটে চলা আঁচড় মুছে যাচ্ছে,
আমার রক্ত হিম,
চাদর আর একটু টানেই হয়তো খুলে যাবে মাটিতে,
ডায়রির পাতা ওল্টাতে শুরু করেছে আপনা থেকেই
এক দুই ....চার,
ধীরে থেকে দ্রুত,দ্রুত থেকে দ্রুততর
যেন শত পালের হাওয়া লাগছে,আমারই কানের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে,
সুক্ষাণু কাগজের শব্দে সাইরেন বাজছে
আর সেই সাইরেনে দূর পৃথিবীর কালো কোষে ঘুম পাড়ানো চরিত্ররা জেগে উঠছে একে একে।
থামো থামো ,বলে চিৎকার করছি আমি,কেউ শুনছে না, কেউ শুনল না।


তারা এল
কালি-ধূলো মেখে।


নিষেধের কারাগার ভেঙে তারা এল শেষ রাতে
আঁধারের ভোর তছনছ করতে।