শহরের মাঝখানে হলেও
আমার ঘরটা শান্তি নিকেতন।
পাশের বাসার গৃহিণীর গলা,
রান্নার একটু আধটু ঠুং ঠাং আওয়াজ,
একটা কাকের কর্কশ ডাক ছাড়া
সুনসান নীরবতা।
এই নিঃসঙ্গতা আমাকে জাগিয়ে রাখে
অনেক রাত অবধি,
ঘুম ভাঙ্গায় সুর্য যখন যুবক হয়ে উঠে।
আজ নাকি প্রবরণা!
চিংড়ির পোনার মত চিকন চাঁদটা
ধীরে ধীরে কখন ষোড়শী হয়ে
রূপের পসরা সাজায়
জানা হয় না।
ফেসবুকে শুভেচ্ছার ঢালা,
ইনবক্সে নক করেছে অনেকে,
আমিও শুভেচ্ছা দিয়েছি দূর থেকে।
এতক্ষণে নিশ্চয় সব ক'টা বিহারে
পুণ্যার্থীর ভীড় লেগে গেছে।
ধূপকাটি, মোমবাতি আর পূজার উপচার
ভরে গেছে বুদ্ধের বেদী।
বুদ্ধ এগুলো ছুঁয় না।
তারপরও মনের মাধুরী মিশিয়ে নৈবেদ্য নিবেদন।
আজ আকাশ প্রদীপে চাঁদের আলো
ম্লান হয়ে যাবে। আমার দেখতে মানা।
এমন নিঃসঙ্গতা কেউ চায় না।
কত জনমের ভাগ্য আমার জানি না,
না চাইতে পেয়ে গেছি।
আজ তো সন্ধ্যাই হবে না।
না হলেও রাত বাড়বে, উত্তাল হবে বিহার চত্ত্বর,
প্রব্রজ্জিত পুরুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হবে বুদ্ধের বাণী।
কেউ শুনবে কেউ শুনবে না।
গভীরতায় রাত ঘুমাতে যাবে,
চারপাশে থেমে যাবে কোলাহল।
চেতনার গভীর থেকে বেরিয়ে আসবে শব্দের স্রোত।
চায়ের কাপটা এ্যাসট্রেতে রূপ নেবে।
সম্পন্ন হবে আমাকে জাগিয়ে রাখার সব আয়োজন,
কিছুটা প্রাণ ফিরে পাবে-
আমার শান্তি নিকেতন।