সরতে সরতে আনেকগুলো দশক পেরিয়ে এখন খাদের কিনারে    
ঘরে ঘরে অটুট আঁধার, কিছু আলো জ্বলছে দূরের মিনারে  
চোখ সওয়া হয়ে গিয়েছে, প্রতিবাদী ভাবনার শিকড় রস হীন
হলুদ পাতারা দিন গুনছে, হালকা বাতাসেই নিশ্চিত হবে লীন
কাকে জানাবো বেদনার কথাকলি, হয়ত বলবে কেউ  অর্বাচীন।    


একটা আকাশ ছিল যেখানে উঠত প্রতিদিন সোনালি স্বপ্নের রবি
সবুজ ক্ষেত ছিল,  প্রতিদিন সেখানে খেলে যেত জীবনের ছবি
বে-সুরো গলায় চলিত শব্দের পদাবলিতে দুঃখ সুখে অন্য জীবন
ভেজা মাটির গন্ধ, তারাদের হাসি, ভোরের কাকলি ছিল আপন
নতুন ফসলের রঙে সুবাসে বদলাত সময়ের রঙ, মুখে মুখে হাসি  
যাত্রা; পালা গানের আনন্দমেলায় ছড়িয়ে থাকত খুশী রাশি রাশি।  


গাছ তলায় বাঁশের মাচা ছিল, গল্প ছিল; মজা ছিল;  স্বার্থ বর্ণ হীন      
বিপদ আপদে প্রতিবেশী ছিল, সামাজিক বন্ধন ছিল সম্পর্কে রঙিন
চার দেওয়ালে বদ্ধ ‘ আমি’ ছিল না, মানবিক উঠোন ছিল বেড়া হীন
হিংসার পাহাড় ছিল না, সাদা-সিধে যাপনে জীবন ছিল না দিশাহীন  
দিলখোলা হাসিতে উঠত তুফান, নির্ভেজাল মজার আনন্দে সকাল সন্ধ্যায়      
চিনে বাদামের ঠোঙাটা ঘুরত হাতে হাতে, রঙ লাগত না মজার কথায়।    


ঘুম ভাঙলেই কানে আসে কলহের ধ্বনি,  ভিক্ষান্নেও ভাগ বসাবার হুঙ্কার    
প্রয়োজন যার সে পায় না কিছুই, শুধু চতুর চালে আঙুলে কালির অধিকার      
শিশু শেয়ালেও যদি নলি কাটে, বে-কসুর মিশ্রনে জাত সারমেয় মুচকি হাসে    
লাভ ঠিক কতটা হতে পারে ভেবে, সভা করে উচ্চসরে মেকী কান্নায় ভাসে
শুনে হাসি পায়;  আপাদ-মস্তক মিথ্যা সংলাপ, পচা লাশেও চলে ধান্দার নীতি
ভেবে ও  পাই না কূল, এদের ও নাকি আছে সততা, সভ্য সমাজে উন্নত জাতি !    


ক্ষমতার হাটে বুড়ো চতুষ্পদও বিকোয়, লাভ ক্ষতির অঙ্কে কসাই অতি পাকা  
মিছিরির ছুরি বেয়াদপি বাণীতে কান ঝালাপালা, তবুও মনুষ্যত্বে লাগে না ছেঁকা  
চারিদিকে স্তাবকের ভিড়, মধুর স্তাবক গীতে সদ্য জন্মানো শিশুও গেলে বিষ
তিলে তিলে বলি শিক্ষা দীক্ষা, আইন কানুন, করাল ছায়ার হুঙ্কার অহর্নিশ      
সমৃদ্ধির খোঁয়াড়ে নতুন জাতের চাষ, নেই শোরগোল কর্মহীন প্রতি প্রভাতে
করুনার ভিখে বাড়ছে মাথা প্রতিদিন, জীবনের উৎসব থেকে সরতে সরতে।    


সোনারপুর
১৯/০৫/২২