তুমি কি বুঝতে পারছো না হে মাতঃ সাগরাম্বরা  
অনাকাঙ্ক্ষিত বিতনুর অট্টনিনাদে স্তম্ভিত সভ্যতার দীর্ঘশ্বাসের শব্দ
দিকে দিকে স্তিমিত হয়ে আসা হাসির কলরোল, মৌন প্রাণের আক্ষেপ
তোমার সবুজ স্নেহ লালিত প্রাণে বাঁচার আকুতিতে বিদীর্ণ বাতাস  
অন্তহীন স্থবিরতায় ডুবে যাওয়া সৃষ্টি সুখের উদ্যান দুশ্চিন্তার গুরুভারে
অজ্ঞাতের সম্মুখে পাংশুম্লান প্রাণে বাজে অশনির সংকেত অনিবার।  


তুমি কি শুনতে পাচ্ছোনা বিপন্ন মানুষের কান্নার রোল  
ঝরা পাতার মত খসে যাচ্ছে টুপ-টাপ জ্ঞাতে অজ্ঞাতে সময়ের সাথে
অচলা অধীরা হয়েই থাকবে ? ক্ষমার মহিমায় ফিরাবে না দৃষ্টি !
তোমার লীলাক্ষেত্র দানবের বিষে মন্থর, গতিরুদ্ধ সভ্যতার বিজয় রথ
তবে কি ফিরাবে সৃষ্টির আদিপর্বে ?  পূর্ণ মূল্য শোধের মৃত্যু মিছিলে
নাড়ির বাঁধন ছিন্ন করে নির্মম প্রত্যাঘাতে মিশাবে যুগান্তরের ধূলোয় !  


আগামী ফাগুন আসার আগেই কি মুছে যাবে সব রং
মুছে যাবে খন্ডকালের ছোট ছোট যতি চিহ্নে গড়া উর্বরা শ্যামলীমায়
রাখালিয়া বাঁশির সুর, চাঁদের পেয়ালা ছাপানো মদিরায় নিশির মাদকতা
নিত্যনবীনা আঁচলে বাঁধা উষসী সুরোত্তমের অমলিন হাসির বিচ্ছুরণ
অতন্দ্র তরঙ্গের কল্লোলিত উৎসাহে দিগন্ত জোড়া প্রেম-বিরহের খেলা
দানবের যজ্ঞাহুতিতে উৎসর্গ প্রাণভস্মে কি মিলবে না ফিনিক্সের দেখা !


হে মাতঃ অকরণজাত, ফিরাও দৃষ্টি তব সৃষ্টির সঙ্কটে
বিতনু দানব নিধনে চন্ডাংশের বক্ষ বিদারী দাও সঞ্জীবনী মানবের করপুটে  
দাও শান্তির বারি দুগ্ধসরণি সেঁচে, ক্ষমা কর যত কৃতঘ্নতা আরো একবার
মুক্তকর এ অভিশাপ, বন্ধ করি মরণতোরণদ্বার ঘুচাও জীবনের অন্ধকার ।
.    
সোনারপুর
২৬/০৪/২১


প্রিয় বন্ধুরা,
দেশের সার্বিক অবস্থা দেখে অনেকের মত আমিও মানসিক ভাবে অস্থির এবং একটা শব্দও ভাবতে পারিনি গত কয়েক দিনে। কবিতার আসরের টানে ফিরলাম সকল বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে।  


উষসী সুরোত্তম > সকালের সূর্য
সাগরাম্বরা > পৃথিবী  
অকরণজাত > প্রকৃতি,
দুগ্ধসরণি > ছায়াপথ