মনে পড়ে, জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর পরে আসত পটো
দিঘি হতে তুলে রাখা পুরনো কাঠামোর বাঁখারি বদলাত
নতুন সুতলি দিয়ে খড় বেঁধে বেঁধে মূর্তির ধাঁচা তৈরি হত
সকাল থেকে কচি-কাঁচাদের দলে আমাকেও খুঁজে পাওয়া যেত।


সরকারদের আটচালার উঁচু মাটির দালানে সারাদিন মাতামাতি
তুঁষ আর পাট মেশানো মাটিতে খড়ের ধাঁচা ধীরে হত পরিপাটি  
শুকালে, আবার মাটি, তারপর কাদাজলে মাখানো কাপড়ের ফালি  
তারপর পটো লাগাত মুণ্ডু, কচি চোখ অবাক বিস্ময়ে দেখত খালি।  


শুকালে, চুন আর আঠা গুলে সব মূর্তিতে মাখাতো ভালো করে
কচি কচি মুখে আনন্দের রেশ, মন চাইত না আসতে সরে
রঙের পোঁচ দু-বার, তারপর চকচকে তেলে বদলে যেত ছবি
হাতে কুঁচিয়ে পাটের কালো চুল লাগাত মাথায়, পটো কাকা রবি।


সিংহের ঘাড়ে পাটের কেশর , ময়ূরের মাথায় রঙ করা মাটির ঝূঁটি  
নতুন চকচকে কাপড়ে, সোনালি গয়নায়, টিনের অস্ত্র মন নিত লুটি    
কত সকাল বিকেল কেটেছে আটচালার দালানে দাঁড়িয়ে বসে
স্মৃতির দালানে আজো অমলিন সেই দিন গুলো, একলা লুকিয়ে হাসে।    


মনেপড়ে, মিত্তির ডাঙ্গা থেকে কাশ ফুল ভেঙে বাড়িতে আনা
কোথায় সাজাব, কি হবে তা দিয়ে;  সে সব ছিল না জানা  
উঠোনের কোনায় শিশির ভেজা সবুজ ঘাসে শিউলির ছড়াছড়ি  
বোঁটাছিঁড়ে হাতে ঘসে ঘসে, ছাপ তোলা খাতার পাতা জুড়ি।    

বিভূতি
সোনারপুর
১৯/১০/২০