ঘরে ফেরার পর থেকে হাজার প্রশ্নের ঝড় বয়ে যায় জয়ের সদ্যযুবক মনে
এখানে আকাশ আছে ভাবনার অবকাশ আছে তবুও উত্তর নেই কোনখানে
এখানেও বাঁচার লড়াই প্রতিদিন জীবনের জন্য অন্য প্রাণের সাথে
মেদিনী কাঁপানো হিংস্র গর্জনে ঘুম ভেঙে যায় কোন কোন রাতে
গোয়ালের আবাসিক দড়ি ছিঁড়তে চায় চির চেনা গন্ধের উগ্র ঘ্রাণে  
মোহিনী রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে টিন পেটানোর শব্দ ভেসে আসে কানে
সকাল না হলে বোঝার জো নেই, আঁধারে ছড়ানো বাড়িগুলোতে কি হল
এক টুকরো মাটির আশায় বাসা বাঁধা মানুষ গুলো কি সত্যি আছে ভালো !    
এখানে ম্যানগ্রোভ ঘেরা নদী পারের খবর পেতে ও মাস গড়িয়ে যায়
রেড়ির তেলে জ্বলা মাটির কুপির আলো কতটুকুই বা আঁধার সরায় ।


অনেকগুলো দিন পেরিয়ে গেলেও জয় একবারও যায় নি কাছারিতে
মনে পড়ে গঙ্গা পাড়ের আখড়ার কথা, হয়ত গুলি চলছে লাল দীঘিতে  
এখনো কি চলছে কাটা কাটি ? যে যেদিকে পারছে ছুটছে ঊর্ধশ্বাসে
ভেবে পায় না জয় কে ধরালো এমন ফাটল ? মানুষের দীর্ঘ বিশ্বাসে  
রামু দা বলেছিল বড়লাটের বাড়ি দেখাতে নিয়ে যাবে একদিন
তারপরেই শুরু হোল অশান্তির ঝড়, আগুনে পুড়ছে সব প্রতিদিন
কেমন আছে কে জানে ? আখড়া গুরু রঘু, নরহরি, রামলাল, সুখলাল
কোলকাতা তে জেনেছে দোকান বাজার বন্ধ করালে তাকে বলে হরতাল  
রামু দা অনেক কিছু জানতো,  কথা বলত অনেক মজার মজার
সাহেবদের বোকা বানানোর গল্প বলেছিল একটা, চিড়িয়া কা বাচ্ছার।  


অঘ্রাণের শুরুতেই বাতাসে শিরশিরানি, আকাশে সাদা মেঘের দল ভাসে
বেলা না ডুবতেই নদীর জল ধোঁয়া হয়ে ছড়িয়ে পড়ত জঙ্গলের চারপাশে
জয়ের ভালো লাগে না, ভাবে কেন আসতে গেল বাবুর ওখানেই ছিল বেশ
মনেপড়ে পান মুখে রান্নার ঠাকুরের ধমক, গীতার মায়ের গজগজানির রেশ
দুপুরে খাবার পরে মাদুর পড়ত পাশাপাশি, বাঁধা নিয়মে কাটত প্রায় প্রতিদিন
রামলাল, সুখলাল কি বাড়ি ফিরেছে ? বলেছিল ঘর পৌঁছতে লাগে দো-দিন।  


সোনারপুর
২০/০৬/২০২৩