কর্তার ঘুম ভেঙেছে আজ সকাল সকাল, বসেছেন এসে বারান্দায়
একমনে দেখছেন, কার্তিকের হিম ঘাসের ডগায়, গাছের পাতায়
দূরে, দখিনের সবুজ বনানী ছুঁয়ে আসা সমুদ্রকান্তার নির্মল জীবপ্রাণ
কোমল স্পর্শে প্লাবিত করে যায় চিত্তক্ষেত্র অকাতর অভিভব দান
মিষ্টি অহনার সোনালি সৌরকর ছুঁয়ে যায় বলিষ্ঠ তনুর পীত সংযম
মৃত্যুঞ্জয়ী আশা সংগীতে জাগে আগামীর কর্ম-ইন্দ্রজাল বাসনা সক্ষম
সুদুর পিয়াসী মন ওড়ে প্রজাপতি সাথে, গুণ গুণ করে মধুপের ঝাঁক
যেন বহুকাল পর অন্ধ প্রকোষ্ট হতে শুনছেন মুক্তির আনন্দ ডাক।
নিধি এসে দাঁড়ায় জল ভরা পাত্র, শুভ্র মখমলি তোয়ালে হাতে
দিনের প্রথম প্রহরের কর্ম ভাগে অকৃপণ নিষ্ঠার মৌন সেবা ব্রতে
বাবু বলেন, তুই দাঁড়িয়ে আছিস ! দে; দে ; বোলতে পারিস নি
দেখ; কি সুন্দর লাগছে দখিনের জঙ্গলটা, অনেক দিন চোখে পড়েনি
নিধি চুপ, ভাবে এমন ভাব তো আগে সে কখনো; কোনোদিন দেখেনি
আজন্ম কাল সে দেখেছে ভীষণ রাশভারী সুপুরুষ এই মানুষটা কে
যার দাপটে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়, সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে
তবে কী ! ভালো কোন খবর; পুরনো মকোদ্দামায় জিত হয়েছে !
তুই ঝড়ো মাঝি কে খবর দিস, আর পূবের ঘর গুলো সাফ সুতরো করাস
নিধি বুঝতে পারে সব, ছোট দাদাবাবু আসবে ঐ ঘরগুলো তার আবাস
মা মরা ছেলে, বাবুর বেশী টান ছোট দাদাবাবুর উপর, বড় ছেলের চেয়ে
নিধি শুনেছে কর্তা মা মারা গিয়েছেন কম বয়সে দাদাবাবুর জন্মের সময়ে
হিরেন ঠাকুর; প্রতিদিনের মতই বাবুর সকালের খাবার নিয়ে হাজির
হালকা সবুজ ইটালিয়ান মার্বেল টপের নকশা করা টেবিল মেহগনির
সাজিয়ে রাখে সদ্য ভাজা কাজু বাদাম, রজত পানপাত্রে ফলের নির্যাস
করজোড়ে নমস্কার জানিয়ে বিদায় নেয়, কাজ তার বড়মার ফাইফরমাশ।
সোনারপুর
২৭/০৬/২০২০