পেশাগত পরিচয় যাইহোক না কেন কথাগুলো শুনতে লাগে বেশ
ঝিমধরা যাত্রায় যে কোন বাহনে বা হাটে বাজারে থেকে যায় রেশ
চিৎকার চেঁচামেচি ঠাসাঠাসি ভিড়েও থেমে থাকে না কথার যাদু
বিদ্যান অবিদ্যান শোনে সবাই কিছু কিছু স্বরে ঝরে মজার মধু
পোশাকে ভিন্ন নয়; চলনেও নয় বলার অভ্যাসে তারে চেনা যায়
হতচকিত মানুষ কেউ হাসে; কেউ ভাবে এত কথা কোথায় পায় ?


দূরপাল্লার ট্রেনে অজানা ষ্টেশনে আবছা ঘুমে আজো কানে আসে
ভোরের ডাক;  চা—এ গরম চা – মনটা নেচে ওঠে বারো মাসে
ট্রেন ছুটছে – বিরতিতে নানা ভাষায় নানা স্বরে পরিচিত হয় কান
নানা প্রদেশের খাবার, ডাব থেকে লস্যি,  সাদা পানি বাঁচে প্রাণ ।  


স্বল্প পাল্লার ট্রেনে বাসে প্রতিদিন যাতায়াতে মেলে জিনিষ রকমারি
সুঁই থেকে বই কি চাই নানা জনে আনে পালা করে সব দরকারি
কানে আসে – ও দাদা গলা হয়েছে কাঠ ? চুষুন চুষুন চুষলেই রস  
আর কতদিন সইবেন জ্বালা ? স্রেফ পকেটে রাখুন শত্রু হবে বশ।


পরের ষ্টেশনে – এই যে দাদারা, বেড়াল কুকুরের বাচ্ছারা -  যদি কামড়ায়
ভুলে যান ইঞ্জেকশান – পরীক্ষিত বাম, অসময়ের বন্ধু বিশ টাকা বেশী নয়
লাগাবেন নাকি ? বাড়িয়ে দিন মাথা, হাতে হাতে ফল, ছোট দাম কাজ বড়  
ভাই কমলের পেন – রকেটের মত চলে, লেখা পড়ায় সব্বাই হবে দড়।


সুবেশ ভদ্রলোক সিট ছেড়ে দাঁড়ালেন, সুপুরুষ চেহারার তরুণ হকার    
বললেন সবাই মিথ্যা জেনেছেন, শুনে যান আসল কারণ, নয় অসার    
সিরাজদৌলার হার হয়েছিল কেন  ? ঠিক কি ঘটেছিল আম বাগানে  
ইতিহাসে পাবেন না, দীর্ঘ গবেষণার ফল বহুকাল থেকে যাবে মনে।    


যাত্রীরা উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে, সৈন্যরা বসে ছিল আমের ডালে ডালে  
ক্লাইভের উপর ঝাঁপাবে বলে লুকিয়ে ছিল সবুজ পাতার আড়ালে
বিধি বাম,  আমের ডাল উঠল নড়ে, দাদ আর চুলকানির জাঁতাকলে
ব্রিটিশ সৈন্য চালালো বন্দুক, সূর্য ডুবল পলাশীতে সব বুদ্ধি গেল জলে
এট্যাচি খুলে কৌটা দেখিয়ে বলল, নিয়ে যান সারবেই তিনদিন লাগালে
পরের ষ্টেশনে নেমে যাবো, দাম বিশ টাকা,  হাত বাড়ান প্রয়োজন হোলে।  


পরের ষ্টেশনে অন্যজন এলো, ও দাদারা আর কত ঠকবেন এবার শিখুন
স্বাধীনতা থেকে ঠকে ঠকে ভুত, তিরিশের বিনিময়ে এবার অনন্ত জেগে উঠুন    
বাংলা ইংরাজি অঙ্ক, সহজ ছড়ায় রঙিন ছবি, সেট নিলে ফ্রি বর্ণ পরিচয়  
নিজে শিখুন পোলা-পান কে ও শেখান, দূরহোক জন্ম জন্মান্তরের ভয়।    


সোনারপুর
১৬/১০/২০২৩