খুব ভোরে,কেরামত মস্তানের কণ্ঠ মাইকে ভেসে এলে
মুখ লুকাতাম লেপের মধ্যে,শীতের সকালে
ভয় পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতাম ছেলেবেলায় ! 


আজ-ও কানে বাজে,সেই কণ্ঠস্বর -----
"ঘুমের থেকে নামাজ ভালো কবরের কথা চিন্তা করো"
মনে হতো কেরামত মস্তান বুঝি ঘুরে গেল কালো পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে কোর্টপাড়ার চার পাশ দিয়ে।
সারাদিন ধরে কেরামত বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করতো চাল-ডাল, আনাজ-পাতি, টাকা-পয়সা-- যে যা দিতো।


সে ছিল এক নিবেদিত প্রাণ, সরল সোজা নিরিহ সত্ত্বা,
সারাক্ষণ মগ্ন থাকতো সৃষ্টির চিন্তায়,সৃষ্টি কর্তার চিন্তায়।
শশ্রুমন্ডিত হ্যাংলা পাতলা শ্যামলা মানুষটা গোর খুঁড়তো,
প্রিয়জন রেখে যেত আপন মানুষ, শেষ ঠিকানায়----
সমাহিত করতো সে পরম যত্নে নিষ্প্রাণ মানুষের দেহ।


এখন সেই আত্মত্যাগী মানুষটাও আশ্রয় পেয়েছে গোরে।
চিরনিদ্রার অফুরন্ত প্রহর কাটে তার এ আবাসস্থলে,
কিন্তু সেখানে প্রতিদিন চেরাগ জ্বলে,আলোকিত হয়
ফেরেস্তাদের পাহাড়া বসে নিরন্তর তার আশ্রয় ঘিরে !!


১৪/১১/২০২০
তেজকুনিপাড়া,ঢাকা।