ওরা ভালো আছে!
দানছত্র আগের থেকে অনেক প্রশস্ত করেছে সরকার।
দুবেলার খাবার নিয়ে ওদের এখন ভাবতে হয়না।
ওদের ভাবনা এখন আমাদের নিয়ে।
আমাদের ঘরে’র স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে।


ওরা ভালো আছে!
ঝড়ের গতিবেগের সামনে ওদের পোশাক ছিঁড়ে গেছে।
পরোয়া নেই কিচ্ছুটির।
আমাদের দামী পোশাকের অসুস্থ শরীর নিয়ে ওরা ব্যস্ত।
আমাদের বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিয়ে ওরা ব্যস্ত।


ওরা ভালো আছে!
উপড়ে যাওয়া গাছের তলায় দাঁড়িয়ে, ঠাণ্ডা খাবার হাতে নিয়ে,
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিন তলার ব্যালকনিতে ।
কপালে মেখেছে চিন্তার সিঁদুর।
কি করে ঠান্ডা ফ্রিজের খাবার খাবে ব্যালকনিতে দাঁড়ানো সভ্যতা?


ওদের ভালো থাকতে হয়!
বিধ্বংসী ঝড় ওদের মাথার ওপরের টিনের ছাউনিটাও নিয়ে গেছে।
বৃষ্টির জলে ডুবে যাওয়া সংসারটার শরীর ফ্যাঁকাসে হয়েছে।
আর ওদের মুখ ফ্যাঁকাসে হয়েছে আমাদের অন্ধকারের জীবন দেখে।
আমাদের মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে জমায়েতের লালসা দেখে।


ওদের ভালো থাকতে হয়!
ওদের পরিবারের সাথে দেখা হয়নি ঝড়ের রাতে।
ল্যাম্পপোষ্টের উঁচু শিখরে দাঁড়িয়ে,
তিনতলার ব্যালকনির রঙিন আলো জ্বালাতে, ওরা ব্যস্ত তখন-
আমাদের নীল দেওয়ালটাকে ঠান্ডা হাওয়ায় ভরিয়ে দিতে।


ওদের ভালো থাকতে হবে!
ঘরে খাবার জল না থাকলেও বাড়িতে থাকা লোকটা রাস্তার পাশে কলের লাইনে দাঁড়াতে জানে।
ফেসবুকে ওদের ছবি পোষ্ট হয়না আশানুরূপ ক্যাপশনের সাথে।
তাই ফোন বা ল্যাপটপের ঝঞ্ঝাট ওরা এড়িয়ে চলে।
কিন্তু সুন্দর পোশাকের সাথে তিনতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা-
চৌষট্টি মেগাপিক্সেলের নতুন রান্না গুলোকে, ওরা সাজাতে চায়-
সোশ্যালমিডিয়ার রান্না ঘরে।


তাই ওরা ভালো আছে ?
ওদের ভালো থাকতে হয়! ?
ওদের ভালো থাকতে হবে! ?


রচনাঃ ২৪ শে মে ২০২০ ( লেনিনগড়)