তৃতীয় দৃশ্য
বিকাশচন্দ্র সরকার


আমার একুশ শতকের ভারত
অভাবী আতুর ঘর পেরিয়ে
শালীনতা তোমার পরতে পরতে
সৌখিনতার পরশ সারা গায়ে মেখে
বিনীত কাব্যময় পটভূমিতে তুমি বেড়ে ওঠো।
গোপন সংলাপে প্রগতি আনো
আমার তৃতীয় শ্রেণীর কামরায়।
তবু দেখো, বিশ্বাসের দেওয়াল জুড়ে
মেঘেরা ছবি এঁকে গেলে
গোল্লাছুট মেয়েটা ভেঁজে
সেই কবেকার ঝুম বৃষ্টিতে
তারপর -
কষ্টের লুটোপুটি খেলায়
বানভাসি ছলে নিংড়ে নেয়
গরিবীয়ানায় গচ্ছিত শরীরের রূপ রস।


মেয়েটাকে রোজ দেখি
আমার গ্রাম্য চেতনার অলিতে গলিতে।
মেঠো পথে আলভেঙে হেঁটে চলে রোজ
স্বপ্ন খোঁজে দিগন্তের হাতছানিতে
অঝোর বৃষ্টির শেষে রামধনু রঙে।
রাতের নিরালায় নক্ষত্র আলোকে
বিম্বের কথা তোলপাড় বালিশের কানে।
শব্দরা জেগে থাকে একটা সময়ের পর
বোধহীন চিরকুট স্রোতে।
উল্লসিত অপরাধ ছাড়পত্র পেলে
মানবিক লেনদেন লেখ্য কথার ভাঁজে
বোধেরা ঘুমিয়ে পরে
অনামিকা মেয়েটির রক্তের ছোপে।
আমার একুশ শতকের ভারত
নগ্ন বিকৃত লাশ বুকে - পিঠে নিয়ে
মানুষ খোঁজে, জীবনের ক্যাটালগে।


সমাজ সাজানো শুধু বিকল্প দায়ভারে
বেদুইন যন্ত্রনা মুখ ঢাকে মোহনার আঁতরে
আদলটা বদলেছে শুধু।
আজো গোত্রহীন বদ্ধভুমিতে
ভুখা পেট, আদুল গা, ঘুমপাড়ানি গানে
বর্গীর গান ভাসে মাতৃকোল জুড়ে।
বেথুনের বিবর্তনে সভ্যের ধারাপাত
মহাজনী চাবুকে বিশ্বাসী রাত
ক্ষত বিক্ষত করে মুক জোৎস্নাকে।
দেওয়ালে দেওয়ালে শুধু সংঘাত এঁকে
আমার ভারত, একুশ শতকের ভারত
নীরব মোমবাতি মিছিলে হাঁটে
মেয়েটির থেতলানো উরু উপত্তাকাময়।