সহস্র আঁখির নিযুত পলকের ভীরে
আমার দৃষ্টি জোড়াও চেয়ছিলো সেদিন গঙ্গার তীরে।
সুহাসিনী, মনোহারিণী সেই রূপসিনীর শব যাত্রায়
মুখখানা তার আর একবার দেখার অপেক্ষায়।


গঙ্গার পাড়ে গড়ে ওঠা সেদিনের সেই ভীড়
ঠেলে ঠেলে চলে, করেছিলাম অপেক্ষা অধীর।
ভাবছিলাম, তারে দেখে সূর্য কিরণ মুগ্ধ হয়ে
আজও বুঝি, যাবে মেঘের আড়ালে হারিয়ে


বিশ্বাস ছিল সকল প্রজাপতি, ফড়িংয়েরা
ডানা তুলে করবে শুরু ওড়া
তাহার চুলের গন্ধের ঢেউয়ের পিছু পিছু
কোরাসে তাদের, বেদনার সুরেরা উঠবে উঁচু নিচু।


সকালের শিশিরেরাও হয়তো চালতা ফুল ছেড়ে
দুর্বার ডগায় করে আসবে এই গঙ্গার তীরে।
আসবে হয়তো পদ্ম, কমল, ডালিয়া আর জবা
রূপসিনীর সেই রূপ দেখার সুযোগ হারাতে চায় কেবা।


সুদীর্ঘ অপেক্ষার পর, মুখখানি তাহার
একবারের মতন, সুযোগ হয়েছিল দেখার।
বিশীর্ণ তনুতে তার তখনো লেগেছিল মায়া
হাসিটুকুন খুইয়ে, মুখে ছিল বিষন্নতার ছায়া।


দিঘল কুন্তলে তার, তখনো ছিল রক্তিম পদ্ম ফুল
নেতিয়ে পড়ে তারা, কোমলতা হারিয়েছিল বেমালুম।
তাহার দেহের, সমস্ত সুন্দরেরা টেনে বুঝি ইতি
কালের গহ্বরে হারিয়ে, হয়ে গেছে স্মৃতি।


রূপসিনীর মুখে পরিস্ফূট সেদিনের সেই অভিব্যক্তি
মহাকালের পাতায় যেন কবিতা হয়ে উঠে।
তাচ্ছিল্যের কোরাসে,বেসুরো গলায় বলে যায়
রূপ সে এক ক্ষণপ্রভা, হারায় সময়ের বিশালতায়।