যখন ট্রেন থামল তখন সকাল সোয়া দশটা।
হাতে লাগেজ,দীর্ঘ যাত্রা মোরা পৌঁছে গেলাম শেষটা।
পূর্ব বর্ধমান, ওড়গ্রাম, গ্রন্থব্য শ্রীমাশ্রম
প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিলো অতি মনোরম।
আম্র কাননে বসে মোরা পেলাম অপার শান্তি।
নিমেষেই দূর হল সুদীর্ঘ পথ ক্লান্তি।
অতপর গ্রহন করলাম সুস্বাদু  জল খাবার
তাহাতেও ছিলো শান্তি,তৃপ্তি অপার।
ধীরে ধীরে শুরু হল মোদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির।
স্থানীয় গ্রাম্য মানুষের সেথা জমে গেল ভীড়।
আশ্রমবাসী ও গ্রাম্য মানুষের সহোযোগিতায়
আপ্লুত ও অভিভূত মোরা এতো আন্তরিকতায়।


স্বাস্থ্য,চক্ষু পরীক্ষা এবং চলল কাউন্সিলিং
যোগা থেরাপি ছিলো সাথে ন্যাচারোপ্যাথি হিলিং।
এছাড়াও ছিলো সেথা রক্তচাপ ও শর্করা পরীক্ষা।
ইসিজির ও ফিজিওথেরাপিরও ছিলো সুব্যবস্থা।
অনুষ্ঠানের কাণ্ডারী  যিনি ধরেছিলেন সামগ্রিক হাল
তিনি মোদের সকলের প্রিয় ড.সুব্রত পাল।
এছাড়াও ছিলেন সেথা শ্রদ্ধেয় ডাক্তার শ্রী স্বরুপন।
সর্বত্র সবেতেই ছিলো তার নিখুঁত পর্যবেক্ষণ।
ড.গুপ্ত,অমিয় স্যার,সোনালী ম্যাম ও ছিলেন সাথে।
সকলকেই ধন্যবাদ হৃদয়ের অন্তঃস্থল হতে।


দুপুরেতে ছিলো সেথা সুস্বাদু আহার
রকমারী রান্নার আহা কি বিচিত্র বাহার!
ভাত,ডাল,জ্যন্ত মৎস, বিচিত্র শাক ও তরকারী
চাটনী পাপর মিষ্টান্ন ছিলো রকমারী।
বৈকালে হল শেষ মোদের স্বাস্থ্যসেবা শিবির।
তারপর বিচিত্রানুষ্টান দেখার লেগে গেল ভীড়।
হঠাৎ সেথায় ঝড় বৃষ্টির হল আগমন
তেতুল ও আম ঝরে পরতে লাগল সর্বত্র তখন।
চলল গল্প আড্ডা হাসি মজা লোডশেডিংয়ে
কেউ কেউ ছুটে গেল আম্রকাননে
কেউ বা তৃপ্তি পেল স্নিগ্ধ সন্ধ্যা স্নানে।


কিছু সময় পরেই থেমে গেল বৃষ্টি থেমে গেল ঝড়
নৃত্য,গীতি, শ্রুতিনাট্য প্রদর্শিত হল স্টেজের ওপর।
নাচ,গান, আবৃত্তি শেষে মোদের মূকাভিনয়
যোগা প্রদর্শন করেছিল সকলের মন জয়।
অতপর সুব্রত স্যারের বক্তব্য উপস্থাপন
জানিলাম শ্রীমাশ্রম নিবাস প্রতিষ্টার কারন।
আধ্যাত্মিক মানুষ ছিলেন শিক্ষক শ্রী শংকর প্রসাদ নাগ
হঠাৎ একদিন সুব্রত স্যারের সাথে হল তার ফোনে আলাপ।
স্যারের অনুপ্রেরণাতেই তিনি আশ্রম বানালেন।
স্বীয় ভাগ্নে প্রদ্যুৎ কে শিবানন্দ হেলথ সোসাইটিতে পাঠালেন।
শিখিয়া চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিবিধ নীতি।
আশ্রমেই শুরু করলেন তিনি যোগা ও ন্যাচারোপ্যাথি।
শুনিয়া আশ্রম নির্মানের এই সুন্দর গল্পকথা
স্যারের প্রতি বর্ধিত হল শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা।


রাতের খাবার শেষে মোরা গেলাম শুতে
ছোট্ট শৃগাল ছানা এলো মোদের দেখিতে।
পর দিবসে ছিলো মোদের শুধুই ভ্রমন
ভেষজ উদ্যান প্রাতে করলাম পর্যবেক্ষণ
দারুচিনি, লবঙ্গ, হিং,কর্পূর,মশলা,এলাচ
বিচিত্র ভেষজ উদ্ভিদের সেথা পত্র বিলাস।
শালুক,জলপদ্ম আর লজ্জাবতী লতা
গাছেরাও বুঝেছিল যেন মোদের আগমন বার্তা।
সুশোভিত বনানী আর বিস্তীর্ণ সবুজ ধরা
আনন্দে আবেগে মোরা সেথায় আত্মহারা।
অতপর মোরা বেরলাম তীর্থ দর্শনে
ফুল্লরা দেবী ও কংকালী তলা উদ্যানে।
মস্তক সিক্ত করে সতী পীঠের জলে
সেথায় নাচিলাম মোরা ঝুমুরের তালে।


পথে আহার শেষে সোনাঝুড়ী হাট
উন্মুক্ত প্রাঙ্গন যেন গগন ললাট।
কেটাকাটি ফাটাফাটি স্বল্প সময়ে
শীঘ্রই পৌঁছলাম মোরা প্রান্তিক স্টেশনে।
অতপর মা তারা এক্সপ্রেসের হল আগমন
গৃহমুখে হল সকলের প্রত্যাবর্তন।
কত আনন্দ কত শিক্ষা কত আন্তরিকতা
হাতে কলমে এ এক অভিনব অভিজ্ঞতা।
এই ভাবেই কেটে গেলো স্বরণীয় দুটো দিন
এগিয়ে চলুক শিবানন্দ হেলথ সোসাইটি মানুষের স্বপ্ন করে রঙিন।