"ফুলশ্রী তোমাকে বলছি"
                বিপ্লব দাস


এমন বসন্ত বাতাসে মন খারাপ মনে বয়ে বেড়ানো
লাশের এক মহা মিছিল।
সময়ের ঠোঁটে ছোঁয়ানো লিপস্টিকের স্বাদের থেকে,
লুটে নেওয়া ফুটপাত জানে দুঃখের লুকায়িত স্তর।
চোখের অশ্রু মুছে দেবার জন্য ইন্দ্রজালের নির্ভরযোগ্য  কাব্যিকা চায়না।
স্যাঁতস্যাঁতে জীবন সংগ্রাম সুন্দর হবার  সুরাহা চায়না।
শহরের দেয়ালে দেয়ালে সুখের সুদ বেড়ে গেলে অসুখের শোভাও বেড়ে যায় দ্বিগুণ।
উদয়–   অস্তে চক্রাকারে তোমার চোখে তখন জনপ্রিয় অপরাধী।
শহরের ঠোঁট পুড়ে যায় প্রিয় মানুষের অন্যায়ে।
আমি এই ব্যথার কৌটো নিয়ে হাসির জন্ম দিই।


হয়তো কণ্ঠস্বর ভুলে যাব এমন ভেবেছিলে,
সবকিছু ভুলে যাবো,
কিন্তু তোমাকে ভুলে যাবার অসুখ নেই।
ত্রিকোণ রাস্তা, সে দিনের আবহাওয়া
সামনে শনিমন্দির, মানুষজনের মন্দদৃষ্টি
তবুও  ছাপিয়ে গেছিল আমাদের ভালোলাগার  শরম ফোয়ারা।
তোমার হাসির বৃষ্টিস্নানে আমি  
সুদ্ধ শহর শুদ্ধ।
মনে না পরা এক ক্যালেন্ডারে   ছাপ  আজও স্পষ্ট।
ম্যাটমেটে সালোয়ার কামিজে লটকে  ছিল নিজেকে ধ্বংস করবার অখুক।
একটা ঘর ভাড়া চাই, একটা আস্তানা,
আমাকে কেউ দেখতে পারে না,
আমি আর ফিরে যাব না ,
হাউ মাউ কান্নায় বলে ছিলে তুমি।


স্বর্গঈশ্বরী মায়া সন্ধ্যার বারুদ দিয়েছে ভরপুর।
তখন নিজেকে চিনতে পারিনা আমি।
দপ করে জ্বেলে উঠি একটুও শুশ্রূষা দেবো বলে।


তোমার সঙ্গে নিয়ম করে আজ কথা নেই,
মনের ব্যথাগুলো ঝরিয়ে সুস্থ ফুল হয়ে ফোঁটা নেই,
তবু আজ বুকের মধ্যে ছ্যাঁৎ করে নাড়া দিয়ে উঠলো।
শহরের তপ্ত দুপুরে খসে খসে পড়ছে  শুধু ভাবনা
অবাক হয়ে ভাবছি পাতাগুলো খুলে।


চেনা কণ্ঠস্বর বলে উঠলো– "ম্যাডাম বাড়ি নেই,
আপনি পরে আসবেন"।


তবুও আমি ওষুধের প্যাকেটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,
নিয়ে নিন।
অবশ্যই টাকা দিয়ে আসতে বলবেন অফিসে।
অর্ধেক হাতটা বাড়িয়ে বলে উঠলো  ' দিন ' ।
মুখখানি আলোতে  নিয়ে আসতে চাইলো না,
আপনি বলে সহজেই খুলে দিল জানালা।
মনে হল আজন্ম ধরে আমায় চেনে না ।


পাশে বাচ্চাটা দারুণভাবে হেসে উঠলো
মুখে তার এঁটো।
বুঝতে পারলাম কোন অফিসে কাজ করেনা সে
মিথ্যে  বলেছিল সেদিন।
কিছু কিছু মিথ্যের উষ্ণতা এত বেশি মধুর,
ভাবনার দরজা খুললেই কবিতার মতোই হুবহু   তার মুখখানি ভেসে ওঠে।


ফুলশ্রী তোমাকে বলছি,
যে কয়েকটা কথা পালক ছেড়ে গেছো,
তা মন পকেটে  যত্নে রেখে দিয়েছি।


আজ তো তুমি মিথ্যে বলেই– সুখ পাখি।
তৃষ্ণার্ত পৃথিবী তালপাতায়  পেয়ে গেছো ঠিকানা।


আর চরম সত্য যে আমরা আমাদের কাজকে ছোট ভাবি।
গর্ব করে বলতে পারি না...


রচনা–বিপ্লব দাস
তাং–২৫/০২/২০২২