"ঈশ্বরের বেদীতে"
      বিপ্লব দাস


কোন এক "রাত বিক্রেতা"র কাছে তোমাকে চেয়েছিলাম।
মনের আভায় আভায় জলতরঙ্গ গাঢ় আকুলতায়,
অচেনা– অজানা ছিল 'তুমি'টা ঘিরে।


প্রত্যহ অন্ধকার দেওয়ালে তবু সোনালী শব্দের উপমা।
মুহূর্তের ঝলমলে প্রতিক্ষণ এক দৈবিক রসায়ন।
প্রকৃতির প্রদীপ নেভা ধোঁয়ায় তুমি বসানো একটা চুমকি অসুখ,
অনাদিকাল ধরে চলেছিল যার অনশন।
একদিন সত্যিই "রাত বিক্রেতা" একটা দিন আমায় দিয়ে দিলো বিনা আধুলিতে।
হার মানলো আমার তীব্র আকুলতার কাছে।
সেই দিনের উৎসবে ফুটে উঠলে 'তুমি'।
মুখের উপর থেকে একটা দীর্ঘ আহত মুখোশ
শুষে নিল কিঞ্চিৎ বাক্যালাপে।
অন্তঃকরনে, অন্তঃশ্বাসে জ্বলজ্বলে উচ্চারিত ফুল বৃষ্টি।
আলাপলগ্ন থেকেই খুলে যাচ্ছিল অদ্ভুত সব হাসিমাখা দরজা।


আমি তোমাকে পেয়ে ভুলতে বসেছিলাম সব।


সূর্য আলো রং, ঝোপঝাড়ে বসে থাকা শালিকের তৃষ্ণার্ত ডাক,
আকাশের গায় ভেসে বেড়ানো মেঘখন্ড , সন্ধ্যার শঙ্খ ধ্বনি, চেনা প্রিয়জনদের, মনীষীদের জন্মজয়ন্তী, প্রিয়তম আত্রেয়ী নদী, পথের পথিকের অনাবিল দৃশ্যায়ন, পাথরের গায়ে পাথরকুচি জন্মযুদ্ধ।


রাতদিন শুধু "তুমি তুমি" গোধূলির বুকে ভালোবাসার রং,
মেহেন্দির ঐশ্বর্য মানচিত্র এঁকে দিলাম তোমার হাতে।
সন্ধ্যা শহরে  উড়াল দিই পাখি হয়ে শুধু তোমার কাছে।
তবুও  গতকাল রাতে প্রিয়, প্রিয়তর, প্রিয়তম মুখখানির এক অদ্ভুত মুখোশের কাঁটা কম্পাস ফুটে উঠল হৃদয়ে।
এমন অপরূপ,রূপ  তোমার বারান্দায় এসে জীবন
যাপন করবে ভাবিনি,
শুধু নিয়ে গেলাম দাঁড়িয়ে প্রিয়শ্রী মুখের আড়ালে মুখোশের ঘ্রাণ।


আমার হাওয়া আকাশ ছেড়ে চলে যেতে চাও।


হে...
"রাত বিক্রেতা"  তোমার এত উদার প্রস্তুতি,
    আমার আবেগ আঘাতে তোমার উজ্জ্বল বারান্দাটা আমায় দিয়ে দিয়েছো।


যে সমুদ্রের আশেপাশে ঘুরে এলাম,
সে এক ডোবামাত্র।
আমি তোমার পদতলে তিতিক্ষাপ্রার্থী।


ভালোবেসে প্রিয় মানুষের প্রিয় মুখ নয়,
কখনো কখনো মুখোশের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে।


যাও, চলে যাও, বহুদূরে –
তবে আমার হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দাও ঈশ্বরের বেদীতে।
আমার ভালোবাসার অভিশাপ আছে,
সে  সত্যতায় যায় শুধু 'তুমি' গুলো পুড়ে।


‍রচনা–বিপ্লব দাস
তাং–১৭/০৫/২০২২