" রবীন্দ্রনাথকে কবি বলে মনে হয়নি "
               বিপ্লব দাস


রবীন্দ্রনাথকে কখনো আমার
কবি বলে মনে হয় নি।
রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবন্ত ঈশ্বর।
সমস্ত ভাবনার পথ কান্ডারী।
তাঁকে স্মরণ করলে,সর্বদাই সাক্ষাৎ মেলে
জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে ।
তাঁর অনুভব,
মেঘ-বোতামের মতো লাগানো থাকে মনে।
মন খুলে হাসা যায়, কাঁদা যায়, আনন্দ পাওয়া যায়, ভাবনার সাগরে ডুবে থাকা যায়,
বিষন্ন সংক্রমণে প্রেমিকারা ঠিকানা হারায়
রবীন্দ্রনাথ এমনই এক ঈশ্বর
পৃথিবীকে মাথা উঁচু করে বলতে ইচ্ছে হয়,
আমাদের চিরজীবিত এক ঈশ্বর আছেন---
রবীন্দ্র-ঈশ্বর!
আপনাদের এমন ঈশ্বর নেই!!


তবে নতজানু, জোড়হাতে,
কোন মানবীকে প্রণাম করতে দেখিনি আজও।
এ মনুষ্যত্বের ভুল,
ঈশ্বর দোরগোড়ায় এসে,গোমরা মুখে ঘুরে যায়।
আমরা কী বড়ই অসহায়!
এই ঘুরে যাওয়াকে, কি  বলে
অভিধানের পাতাতেও নেই।


যখন থেকে জেনেছি,
---এই মানুষটিই রবি ঠাকুর
এতটুকু মনে হয়নি তার রং বদল হয়েছে।
রবি ঠাকুর কোন রং-বাহারি বৃক্ষ নয়,
রবি ঠাকুর আকাশ-সাদা মেঘের মতো।


আমরা মাটির মূর্তিকে কোটি কোটি টাকা
খরচ করে পুজো করি।
যে মাটির ঈশ্বরকে,মাথা ঠুকে
ভালো থাকা,ভালো খাওয়া,ভালো রাখার
                   অনুনয় করি,
তার করুণা প্রার্থনা কোনদিন পূরণ হয়নি।


রবি ঠাকুর আমাদের সেই বৈভব,
যা সংখ্যাতত্ত্বের বাইরে অসীম অনন্ত।


তাকে চাইলে সমস্ত কিছু পাওয়া যায়।
সুখ-শান্তি-অভিমান-খাদ্য-বাসস্থান,
সব কিছু, স অ অ অ ব কিছু।
তাঁর গান, কবিতা, উপন্যাস, নাটক,
প্রজন্মের পর প্রজন্মের রুটি-রুজির জীবিকা।
তাঁর গল্প, তাঁর দর্শন ,আমাদের উত্তরাধিকার।  তাঁকে,আর তাঁর সীমারেখা,
        আমাদের আজও জানা নেই।


যাদের মনে,প্রাণে, মগজে, সর্বদা রবি-ঈশ্বর
তারাই বেঁচে আছে রবি-ঈশ্বরের জন্য।
তাদের সেই অচেনা মুখগুলো চেনাতে শিখিয়েছে,
রবীন্দ্রনাথ এমনই এক জীবন্ত ঠাকুর,
তাকে চাইলেই সব কিছু পাওয়া যায়।


তবে কেন শুধু পঁচিশে বৈশাখ ?
কেন বাইশে শ্রাবণ ?
একদিন গলা ফাটিয়ে গান:
"আমার পরানো যাহা চায় তুমি তাই,তুমি তাই গো"।
কেন নয় অন্য দিনগুলি,
প্রতি ঘরে ঘরে,
ফুল জলে ধূপের গন্ধে রবির আরাধনা ?
কেন নয়,গীতবিতানের গানে গানে রবি বন্দনা ??
রক্তকরবী,রাজা,পূরবী,ডাকঘর,
পুনশ্চ-এর পাতা খুলে,ভালোবেসে,
তাঁকে আঁকড়ে ধরি না বুকের খাঁচায় ?
মানুষ নিজেকে ভালোবাসতে গিয়ে নিজেকেই হারায়, রবি-ঠাকুর তেমনই থেকে যায় রবীন্দ্রনাথে।


রচনা –বিপ্লব দাস (রাহুল)
তাং–১/০৮/২০২১
বিকল ৫টা২০