শেষ স্থান
বিপ্লব দাস
আট টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কবির কবিতা।
অপ্রোজনীয় ভেবে পড়ার বই,কবিতা বই,গল্প বই–
শেষ স্থান ভঙ্গারির দোকানে,
আবর্জনা ভাবে পড়ে আছে নোংরা এক স্থানে।
এমন কী পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ অপবিত্র করছে লোকে ?
আর জ্বলন্ত ক্রোধ জ্বলছে আমার বুকে।
সবকিছুই মানুষ জানে
দেখেও শান্ত হয়ে থাকে
ভালো কাজের আকাঙ্ক্ষা এই জীবনে।
দিনে দিনে শত শত বই পৌঁছায় ভাঙ্গার খানায়,
দাউ –দাউ করে জ্বলছে শুধু লেখকের লেখা
আজ পরিণত হচ্ছে বইগুলো মুড়ির ঠোঙা
দিনের-পর-দিন মৃত্যুর মুখোমুখি লড়াই,
ক্রেতা বিক্রেতার বেড়েই চলেছে মধুময় ঘনিষ্ঠতা–
তাহলে কি লেখকের লেখালিখি সবই ব্যর্থ –নিষ্ফল?
হাজার রঙের অনুভবগুলো–
আর যেন জোনাকির আলোর মত
জ্বলছে শুধু মিটমিট করে
কখন বুঝি শেষ আলো নিভে যাবে বিক্রেতার পায়ের তলায়,
যুগে যুগে কবিদের কাব্যমালা, ঘুমন্ত শয্যায়।
যাঁরা প্রচলিত বই পিপাসু–
যাঁরা বইকে ভালোবাসো
কিঞ্চিৎ মাত্রও কি বইয়ের উপর তোমাদের ভালোবাসা আছে?
ভক্তি আছে?
বই কেনা মানে তোমাদের লোক দেখানো,
দিনের পর দিন আলমারি সাজানো।
এইভাবে যখন আলমারি হয় পরিপূর্ণ
বই তখন ঘোরে ঘরের আনাচে– কানাচে
বা তোমার পদতলে,
দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই মাথা তুলে।
জীবন্ত লেখকের লেখা ছিন্নভিন্ন করছো তোমরা,
তাদের স্বপ্ন ধুলোয়– ধূলিসাৎ
এইভাবে রাতদিন ঘটছে নবীন লেখকদের লেখালিখির ব্যাঘাত।
যাঁরা বই পিপাসু,যাঁরা সত্যিই বই প্রেমীক–
জঞ্জাল ভেবে বইকে ফেলে রেখো না ঘরের আনাচে-কানাচে।
আমার একটি অনুরোধ–
যাঁরা বইয়ের অভাবে পারছে না পড়তে
পারছেনা অজানাকে জানতে,
খুচরো ধরে ভাঙ্গারির দোকানে
বিক্রি না করে, উপহার করতে পারো তাদের
অসংখ্য খুশির ঝলকানি দেখতে পাবে তাতে।
রচনা– বিপ্লব দাস
২৯ জুলাই ২০১৭