চন্দ্রাবতী! আজ তোমায় বড্ড মনে পড়ছে।
ইচ্ছে করছে, তোমায় জড়িয়ে ধরে একটু আদর করি!
তোমার কপালে এঁকে দিই ভালোবাসার স্মৃতি চিহ্ন।
ইচ্ছে করছে তোমার কোলে মাথা রেখে দু'দণ্ড জিরাই!


চন্দ্রাবতী! তুমি কি জানো, এখন কোন্ ঋতু এ ধরায়?
হয়তো ভালো মনে নেই তোমার! আমি বলছি, শোনো!
এঋতু তোমার অতিপ্রিয়। হেমন্ত।
হেমন্তের নিমন্ত্রণে প্রকৃতিতে এখন দারুণ ছন্দ,
শিশিরস্নাত সবুজঘাস, সোনালিভোরে রাঙারবির-
নরম নরম মিষ্টি আলো। মাঠে মাঠে সোনালি ধানের
কী যে মধুর গন্ধ! বাড়ির আঙিনায় শিউলী ফুলের মেলা
বসেছে যেন। এসব না- দেখলে, তুমি হয়তো
বিশ্বাসই করতে পারবে না।


দিগন্তজুড়ে আজ মৃদু পবনে হলদে শাড়ি দোলে, গাছেগাছে
পাখিদের কলরব। এমন দিনে সবুজ গালিচায়
তুমি, আমি প্রজাপতি হয়ে কত যে উড়েছি,
তা গুনে গুনে শেষ হবার নয়।


চাঁদনীরাত, খোলা আকাশ, কোথাও মেঘপরীদের
আনাগনা নেই। জ্যোৎস্নার আলোয় ভেসে যায়
মায়াবী পৃথিবী; আমাদের খোলা ছাদে পাশাপাশি বসে
রঙিন স্বপ্নের গল্প হত দুজনার।


সে সব কি এখনো মনে পড়ে তোমার? চন্দ্রাবতী!
আমি এখনো হেমন্তের চাঁদনীরাতে এই খোলাছাদে
তোমার পাশাপাশি বসি। তোমার সাথে গল্প চলে সারারাত,
তোমার আলতো পরশে আমার শূন্যহৃদয় সিক্ত হয়;


মরা গাঙে আবার জোয়ার আসে, পালতোলা নৌকা চলে
দূ্রের দেশে, নদীর তরঙ্গ এসে ভিজিয়ে দেয়
আমার বিরান ভূমি। চন্দ্রাবতী! তুমি আমার এত কাছে,
তবুও হাত বাড়ালে ছুঁতে পারি না কেন?


তোমায় ছুঁয়ে দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করে আমার,
ভীষণ ইচ্ছে করে, চন্দ্রাবতী!
যখনই তোমার পানে হাত বাড়াই, তখন ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে আসা
ভোররাতের ওই রাক্ষুসে মালগাড়ি
ভেঙে দিয়ে যায় আমার বুকের পাঁজর....!