বসেছিল হেলুরাজ বেল গাছ তলে।
রাশি রাশি বেল সেথা রয়েছিল ফলে।।
ঠেস দিয়ে বেল গাছে দিল হেলু ঘুম।
কোথায় রয়েছে বসে ভুলে বেমালুম।।
হেলূর মাথাটী ন্যাড়া বেল্ গাছ তলে ।
ঘুম ঘোরে ডাকে নাক য্ত শ্বাস চলে ।।
জানিত না এক চোর গাছ তলে রাজা ।
বেল চুরি তরে পাবে এত বড় সাজা  ।।
উঠায়ে মারিল এক পাথরের খণ্ড  ।
আঁতকে উঠিল রাজা ঘুম হল পন্ড ।।
লাগিয়া পাথর,  বেল রাজ শিরে পড়ে ।
ছুটিয়া পালাতে চায় চোর উভরড়ে  ।।
কোনোমতে রাজা ছুটে ধরিলেক চোর ।
মাথায় পেয়েছে চোট লাগিতেছে ঘোর ।।
রাজা বলে চোর তোর ক্পালেতে সাজা ।
রহিয়াছে সাক্ষ্য প্রমান দেখ তাজা ।।
চোর বলে ন্যাড়া কেন বেল তলা যায় ।
শাস্ত্রের নীতি কথা ভোলা হল দায়  ।।
এতে নাহি মোর দোষ সব দোষ তব  ।
চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে সারা নগরেতে কব  ।।
মানা আছে ন্যাড়াদের বেল তলা যাওয়া ।
মিছে দোষে আমার যে এ শাস্তি পাওয়া ।।
হেলু বলে শাস্ত্রের কথা হল সার ।
ন্যাড়ারা বেল তলা যায় কত বার ।।
ভেবে দেখ যাইবার কথা আছে তায় ।
সব ন্যাড়া বেল তলা এক বারি যায় ।।
তাই দেখ সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়ে আমি ।
তোর দোষ স্থির করি আমি ন্যায় কামী ।।
চোর বলে তুমি বাদী সাক্ষীও তুমি ।
আবিচার কখনও না সবে এই ভুমি ।।
হেলু বলে ঠিক আছে এ বেল প্রমাণ ।
দোষ তব প্রমানিত কর ত্রাহিমাম ।।
চোর ভাবে বেলখানা ছিনে নিলে তবে ।
না রবে প্রমাণ এর রাজা কিসে কবে ।।
যেখনে আসিল মনে এই কথা তার ।
লাফায়ে হেলুর পরে বলে ছাড় ছাড়  ।।
সেখনে বুঝিল হেলু কাড়াতে এ বেল ।
খেলিতেছে এই চোর নতুন এক খেল ।।
বেলখানা একবার যায় হেলু ক'রে ।
কাড়ি লয়ে আরবার চোর বেল ধরে ।।
দুজনে লড়িছে পেতে বেল অধিকার ।
দুজনে সমান কেহ নাহি মানে হার ।।
হঠাৎ ফসকে পড়ে বেল ধ'রা পরে ।
সাহেব দাঁড়ায়ে ভাবে এরা কিবা করে ।।
না দেখিল হেলু কেবা রয়েছে দাঁড়ায়ে ।
হাত ধরে রাখে চোর দিল পা বাড়ায়ে ।।
পায়ে করে টানিতেছে তার কাছে বেল ।
চোরও বাড়াল পা জমিয়াছে খেল ।।
কোনও মতে চোর যদি কাছে টানে বেল ।
শুধালো সাহেব তারা খেলিছে কি খেল ।।
হেলু বলে নাও হে সাহেব এই বেল ।
চোর দিল পায়ে করি জোর এক ঠেল ।।
লাগিয়া পাথরে সেই বেলখানা ফুটে ।
কি খেল খেলিছ সাহেব বলে অস্ফুটে ।।
ভাঙা বেল দেখে হেলু তা'র স্বরে বলে ।
"ফুটে বেল" চোর ব্যাটা ভাঙিল এ ছলে ।।
পায়ে পায়ে কাড়াকাড়ি দেখে পরদেশী ।
"ফুটে বেল" খেলে রাজা সবে বলে আসি ।।
সেই  ফুটে-বেল হল ফুটবল কালে ।
এ ঘটনা সত্যি জানিয়াছি হালে ।।
মিছে বলে হেলুরাজে নাহি কর হেলা ।
নয় মাঠে মারা যাবে খুশীর এই খেলা ।।
হেলুরাজ এই খেলা উদ্ভব করে ।
তাই লেখা রয় "হেল-পুরানের" পরে  ।।