বাড়ি থেকে চিঠি এসেছে,
এখনও পড়া হয়নি,বন্ধ আছে।
চায়ের কাপ নীচে রেখে,
তাবু থেকে বেড়িয়ে,নিঃশ্বাস ভারী করে,
চিঠিটা খোলা হল -
"বাবা,কতদিন তুমি বাড়ি আসোনি,
মা মনমরা হয়ে কাজ করে,
পূজোটাও ফাঁকা গেল,
ব্যস্ত তুমি,বুঝেছি ছুটি পাওনি।
মাঝরাতে ঘুম ভাঙলে
তোমার ঘুমপাড়ানি আদর,
আমায় হাতছানি দেয়,
ফিসফিস করে কি যেন বলে,
আমার ভয় হয়,গায়ে কাঁটা দেয়।
বাবা,খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি এসো,
আমি পথ চেয়ে আছি,
আমার জন্য অনেক বৃষ্টি এনো।
একসাথে কতদিন বৃষ্টিতে ভিজিনি বলতো?
জানো তোমাকে নিয়ে আমি
কবিতা লিখেছি কতদিন!
কিন্তু কেউ আমার কবিতা পড়ে না।
           তুমি পড়বে না বাবা?

চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে,
দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না ভালোভাবে।
এমন সময় বিকট শব্দ করে,
একেরপর এক গুলি ছিটকে এসে,
বুকে বিঁধতে লাগলো,
খাঁচার পাখি মুক্তি পেল।
কাঁটাতারের ওপারে কয়েকটা জীবন,
তখনো আরচোখে তাকাচ্ছে।

দুদিন পরে বাড়িতে চিঠি এলো,
কিন্তু বাবা নিজে লেখেনি,
বরং নিজেই প্রতিটি লেখার মাঝে
লুকিয়ে এসেছে।
মেয়ে তো তেমনটা চাইনি?

যুদ্ধ, তুমি কি দিলে,কি পেলে?
জীবন, তুমি মাঝে মাঝে হারিয়ে যাও কেন?
কবিতার খাতায় খরা দেখা দিয়েছে,
কেউ খোলার প্রয়োজনবোধ করে না এখন।
মেয়েও আর কবিতা লেখে না।
বাবার কাছে বৃষ্টি চেয়েছিল মেয়ে,
বৃষ্টি দিয়ে গেছে বাবা,চোখ ভরে,
শুধু কবিতাটি পড়ানো হল না, বাবাকে দিয়ে।

১৮/০৫/২০১৬