সেদিন পড়ন্ত বেলায় জানালার গ্রিল ধরে
কি যেন সাত-পাঁচ ভাবছিলাম
এমন সময় ছয় বছরের নাতি দাদুভাই
দৌড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বললো- দাদুভাই!
চলো দোকানে যাব, চিউয়িংগাম খাব!
আমি বললাম, ঠিক আছে চল
মহল্লার ভিতর পাকা রোড ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম
মাঝপথে যেতে আমার হাত ছেড়ে দিয়ে
দৌড়িয়ে দোকানের দিকে ছুটলো
ডেকে বললাম, দাঁড়াও দাদুভাই!
তুমি আমাকে একাকী ফেলে যাচ্ছো?
ডাক শুনে দাঁড়ালো
হাত ধরে বললো, আচ্ছা দাদুভাই!
তুমি জোরে হাঁটতে পার না কেন?
বললাম, দাদুভাই বয়স যে বেড়ে গেছে
দেখনা, আর সহজে হাঁটতে পারি না,
হাঁটতে গেলে গায়ে লাগে ব্যথা
আচ্ছা দাদুভাই এমন কেন হয়?
আরে তুইতো অনেক ছোট ছিলি,
এখন তো বড় হলি, সময় কথা বলে।
আজ অতীত স্মৃতিগুলি -
বিস্মৃতির এক ধুঁয়াশার চাদরে গেছে ঢেকে
নাতি দোকানির কাছ থেকে
চিউয়িংগাম হাতে নেয়।
এখনতো বাসা ফেরার পালা।
নাতি বললো, দাদুভাই! তুমি একটা গল্প বলো।
আমি বললাম, ঠিক আছে। তাহলে শোন –
একদিন জঙ্গলের পাশ দিয়ে
পায়ে হাঁটা পথ ধরে চলছিলাম
পাশেই দেখলাম অহি-নকুলের
এক তুমুল যুদ্ধ লেগে গেছে!
আমাকে থামিয়ে দিয়ে দাদুভাই আমাকে বলল,
আচ্ছা দাদুভাই অহি-নকুল কি?
আমি বললাম, আরে অহি-নকুল হলো সাপ বেজি,
ওরা জীবন মরণ লড়াইয়ে ছিল ব্যস্ত;
দাদুভাই বলল, দাদুভাই!
এ যুদ্ধে বিজয়ী হলো কে?
আমি বললাম দাদুভাইকে, সাপ মরে গেল,
আর বেজি বিজয়ী হলো!
দাদুভাই বলল, তাহলে আমি একটি বেজি পুষতে চাই!
হতে চাই কালাপাহাড়, শায়েস্তা খাঁ, আর গেটা থুনবার্গ!
আমি অবাক হয়ে বললাম, আচ্ছা!
তুই এমন কথা কোথায় পেলি?
দাদুভাই বললো, কেন!
তোমার কাছ থেকেই তো শুনেছিলাম।
এরপর বাসায় ফিরলাম -
একাকী ছোট কুঠিরে ঢুকে বালিশে মাথা দিলাম
আর স্মৃতিচারণ করছিলাম,
দাদুভাইয়ের কথার প্রতিধ্বনি
তখনো কানে বাজছিল।
সময় বয়ে চলেছে বহতা নদীর মতো,
মনে ভাবলাম, আমি তো থাকবো না একদিন
কিন্তু তোর এক্সপ্রেশনটি যেন থেকে যায় চিরকাল।।