অদ্ভুত এক সন্ধ্যে নেমেছিলো সেদিন,
আকাশ ছিলো ঘন‌ কালো মেঘে ঢাকা,
বৃষ্টিও হয়েছিলো অনেকক্ষণ.....
তোমার মনে‌ আছে নিখিলেশ ?
আমাকে সংসদ ভবনের মূল গেটের
সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে তুমি সেদিন
ঠিক দেড় ঘণ্টা পরে এসেছিলে ;
লাল রঙের রং জ্বলে যাওয়া একটা
পাঞ্জাবি পড়ে ভিজে একাকার হয়ে
বলেছিলে- “ অনেকটা দেরী করে ফেলেছি তাই না ?”
আমার তখন রাগে গা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিলো,
আধ ঘন্টার উপরে বৃষ্টিতে ভিজে  
মেজাজটা এমনিতেই বিগড়ে গেছে, তার উপর
তোমার ঐ “কি করার ছিলো” মার্কা চেহারা!
উফ! কি যে অসহ্য লাগছিলো না আমার;
ইচ্ছে করছিলো তোমায় চিবিয়ে খেয়ে ফেলি!
তোমার মনে আছে নিখিলেশ ?
রিকশা থেকে নেমে যখন দেখলে-
আশপাশের মানুষ গুলো আমার ভিজে শরীরটাকে
চোখ দিয়ে গিলে খেতে চাইছে, আর আমি ভয়ে,
ঠান্ডায়,লজ্জায় রীতিমতো থর থর করে কাঁপছি;
তুমি তখন এক আশ্চর্য কান্ড করে বসলে!
তোমার বিল মিটিয়ে দেয়া রিকশাওয়ালাকে
ঘণ্টা বাবদ চুক্তিতে রাজি করিয়ে, আমার দিকে
চোখ রাঙিয়ে হুঙ্কার ছেড়ে বললে-
“রিকশায় উঠো, পুরো ঢাকা শহর ঘুরবো আজ।”
যেনো এখানে দাড়িয়ে থাকাটা আমার
দোষের মধ্যে পড়ে, যেন তুমি দেরী করে নয়,
আমিই সময়ের অনেক আগে এসেছি!
নিখিলেশ! তুমি কি এখনো সংসদ ভবন আসো ?
সেই প্রিয় গাছ, প্রিয় বসার জায়গাগুলো,
তোমায় কি আমার মতোই স্মৃতিকাতর করে তুলে ?


কাব্যগ্রন্থ: প্রিয় নিখিলেশ,
                       আমি অবনিকা বলছি।