সরকারি অফিসের কেরানী
গফরা মিয়া,
আসল নাম তার গফুর উদ্দিন,
ছোট্ট নামটা বড় সাহেবের দেয়া।


গফরা মিয়া , বড় সাহেবের
সকল কথায় শুনে ,
অফিসের কাজের বাইরেও সে ,
টাকা পয়সা তার গুনে।


তাইতো বড় সাহেবের
অলস সময়ের , গল্প সঙ্গী,
গফরা মিয়া , মাঝে , মাঝে
কথা কয় বরই ঢঙ্গি।


একদিন দুপুরের খাবার শেষে ,
বড় সাহেবের কাছে করে প্রশ্ন ,
স্যার দেশের মানুষতো শেষ ,
আর বোধয় মিলবে না অন্ন।


বিদ্যুৎ নেই , তেল নাই , ভাড়া বেশি,
রোজগার গেছে কমে ,
এইবার আর রক্ষে নাই ,
ধরছে বুঝি জমে।


আপনেগো তো কত সুযোগ
তাদের জন্য করণের ,
একটু যদি করতেন সাহেব ,
ভয় থাকতো না মরণের।


সাহেব তখন , আয়েশ করে
নেতিয়ে তাহার চেয়ারে ,
পা -খানি তার তুলিয়া রাখিছে ,
ফাইলের দুটি পাহাড়ে।


আধ-বোজা চোখে বলিল সাহেব,
বুঝলি না , গফরা মিয়া ,
দেশে কাহার ,কি হাল হইলো,
কি হবে তা দিয়া।


ভাবছি আমি , এই বছরের
বিদেশ সফর গিয়া ,
বাড়ি একটা কিনা রাখুম ,
মাসের  কামাই দিয়া।


আইলে আবার পুইসা যাইবো ,
প্রকল্প হাতে বেশ ,
তোর কাছে শুধু আজাইরা আলাপ ,
কেমনে চলবো দেশ।


আরে ব্যাটা , বুঝিস কিছু ?
পাবলিক সব হারামী ,
যত দিবি , ততো চাইবো ,
এটাই ওদের বেড়ামী।


কষ্ট করে চাকরি পাইছি
টাকা দিছি প্রচুর ,
এখন শুধু তোলার পালা,
কাজটা করুম কচুর।


হতাশ মনে গফুর উদ্দিন
স্যারের পানে চায় ,
শরীরটা তার কেঁপে উঠে ,
দাঁড়িয়ে শক্ত পায়।


এত আয়োজন , এত ভাষণ
সবকিছু স্যার মিছা ?
আপনারা যদি ফালাইয়া দেন ,
আর যাবে না বাঁচা।


গফুরের মনে যুক্তি আসে
এতো নই সংবিধান ,
সকলের জন্য সমঅধিকার
আপনারা তো দেখান ।


মুচকি হেসে বলে সাহেব ,
আরে বুদ্ধু, বুদ্ধিটা তোর কম ,
এগুলি শুধুই কথার কথা
কাগজে লেখা নিয়ম।