ঘুমটা তাহার উড়ে গেল
বউয়ের গলা শোনে ,
কি,কি আজ নাই ঘরে
বলছে গুনে ,গুনে।


লবণ ,পেঁয়াজ,তেল , সাবান ,
খালি যে , চালের হাড়ি ,
আটার ব্যাগটা শূন্য পড়ে ,
করিতেছে গড়াগড়ি।


বিছানায় শুয়ে কদম আলী
শুনছে এক মনে ,
জ্বরে শরীরটাই কাপ ধরেছে ,
উঠিবে কেমনে।


মোড়ল বাড়ির পুকুর কেটে
যে কয় টাকা পায়,
তাই দিয়ে কি , সংসার চলে ?
বাড়তি কামাই নাই।


মুজুরী তারা দেয় না বেশি ,
বলে কোন লাভ নাই ,
ভয়ে তাই ,বলি না কিছু
কাজটা যদি যাই।


জ্বর শরীরে উঠে কদম
চলিল মৃদু পায় ,
কি দিয়ে আজ বাজার করিব ?
টাকা তো এত নাই।


বাজারে গিয়ে ,দাম করে যা ,
সব দামটাই চড়া ,
এক কোণে তাই দাঁড়িয়ে পড়ল ,
না করে নড়াচড়া।


কি কারণে দাম বাড়িলো ?
জানে না কদম আলী ,
মাথায় শুধু একটাই চিন্তা ,
চালের হাড়িটা খালি।


দেখিলো চেয়ে ,রাস্তার পাশে
গাড়িতে বসেছে দোকান ,
এগিয়ে দেখে ,শত ,শত মানুষ
দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান।


শুধায়ে একজনকে, জানিতে পারিল,
কমদামে বেচে সদায় ,
তারই আশায় কদম আলী
দাঁড়িয়ে ,লাইনে ঠায়।


প্রখর রোদের তাপে কদম
ধুলায় পড়লো লুটিয়া ,
দু-একজন মানুষ ধরতে  তাকে ,
চলে আসলো ছুটিয়া।


খানিক পরে কদম আলী
চোখ মেলে তাকাই ,
ভিড়টা তখন কমে গেছে ,
দোকানটা আর নাই।


ব্যাগটা পাশেই পড়িয়া আছে ,
ধুলায় মাখামাখি ,
শরীরটা আবার কাঁপিয়া উঠিল ,
জলে ভরে গেল আঁখি।


আকাশ পানে তাকিয়ে কদম ,
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ,
এমন জীবনের দায়টা আমি ,
দিবো বলো কারে।


এত মানুষ চারিদিকে,
দেখার কেউ কি নাই ?
কি লাভ এই সভ্য সাজিয়া?
কেন এতো বড়াই ?


দেশের মানুষ না বাঁচিলে ,
দেশ দিয়ে কি হবে ?
কত নিয়ম ,কত আইন
সবই তো পড়ে রবে।