১.
তোমাকে লিখছি...আর একটা মুখর পৃথিবী কমলালেবুর মতো গড়িয়ে পড়ছে আত্মরতির খেয়ালে। ফুল বাতাসে উড়তে উড়তে কাটা মুণ্ডু, কাটা মুণ্ডু বাতাসে উড়তে উড়তে ফুল—নিঃশব্দে ঝরে পরছে মাটিতে। রক্তগন্ধ খেয়ে ফেলছে আসন্ন বসন্ত সম্ভাবনা—আমাদের বিগত নগ্নতাগুলোকে শিল্পের নামে চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে অথবা ভালোবাসার দগদগে ক্ষত মুছে নত হওয়া যেতে পারে কোন তৃষিত রাত্রির কাছে—দেহের স্বচ্ছ মুকুরে কতোকিছুই তো ফুটে ওঠে; তবুও কেন মাংসের মোহন গন্ধে ঠোঁট ডুবিয়ে শুধু জন্মের কাছে ঋণী হয়ে থাকা?


২.
এই রৌদ্র কবলিত দুপুরে তোমার নীল খাঁদে আটকে থাকা হলুদ সূর্যটা নিয়ে কিছুক্ষণ খেলা যেতে পারে। বুঝতে পাচ্ছি, একটা আক্রমণাত্মক ঢেউ নিমেষেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে অথবা ভালোবাসা নামক গোপন অস্ত্রটা সেলাই ছিঁড়ে যেকোন দিকে বেরিয়ে যেতে পারে। বিন্দু বিন্দু ঘামের অনুবাদ শেষে—একান্ত ব্যক্তিগত মুখোশের আড়ালে নিজেরই কাটা হাত নিয়ে এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা—কার ভালো লাগে? অবিরাম ভ্রমণ শেষে দোলকের মতো দুলতে দুলতে যখন ফিরে আসি ঘুমের শরীরে—দেখি,পাদটীকায় ছেঁড়া স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নেই !


৩.
তোমাকে লিখছি... এই মাটি ও বীজের কথা; শস্যের দায় ভারে নত এই দেহ; নুয়ে পরা লতা—নতুন শিকড়—সংগ্রামের কথা। নাক ফুল হারানো শোকগ্রস্ত মায়ের কথা বলতে গেলে জিভ আড়ষ্ট হয়ে আসে। আব্বার ঘামে ভেজা গামছাটা কেউই যত্নে রাখে নি। বোনের চোখের ভাষা বুঝতে বুঝতে অন্ধকার হয়ে এলো আকাশ। যে শিশুটা আমাকে চমকে দিয়েছিল তাকে দেখি না বহুদিন । রক্তমাংসের নাচানাচিতে পৃথিবীটা কেমন থরথর কাঁপছে; আমার জন্ম মুহূর্তের কথা মনে পরছে; মনে পরছে একটা রক্তাক্ত ডিমের ভেতর আমি কেমন চিৎকার করে উঠেছিলাম; আমার সেই চিৎকারের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছিল থোকা থোকা রক্তকরবী না অন্যকিছু ! যা দেখে আমি ভয় পেয়েছিলাম; তবুও জানিনা কোন অহংকারে আমার নগ্ন হাত সেদিন মুষ্টিবদ্ধ হয়েছিল; আজ  কিছুতেই মনে করতে পারি না আমার ছায়ার অন্ধকারে হাটুগেড়ে বসে প্রার্থনা করেছিল কার ছায়া।