কাল মধ্যরাতে স্বপ্নে দেখলাম,
আমার মেরুদণ্ডের হাড় খুলে খুলে
তুমি সোকেসে রাখছ, আর কিছুক্ষণ পর পর
বিচ্ছিরী হাসি দিয়ে ভেঙে ফেলছো জানলার কাঁচ ।


খানিক বাদে পরীর মতো ডানা মেলে উড়ছ শূন্যে
পিছু পিছু ডানা ছাড়াই উড়ছি আমি
তোমাকে ধরার জন্যে।
এভাবে উড়তে উড়তে পেরিয়ে যাচ্ছি পাহাড়,নদী,বন,সমুদ্র;


এক ফাঁকে জলের বোতাম খুলে দেখে নিয়েছি
জলজ জীববৈচিত্র্য- জুপ্লাংক্টন, ফাইটোপ্লাংক্টন,
বড় মাছ ছোট মাছকে কিভাবে আস্ত গিলে ফেলছে
কোন প্রতিরোধ ছাড়াই অনায়াসে!


মানুষের সমাজে যেমনটি হয় এখন খুব সহজে।
মাঝে মাঝে দু’ একটা রঙিন মাছ আমাদের দেখে
ভেংচি কেটে দৌড়ে পালায়
যাদের লেজে নক্ষত্র চিহ্ন আছে ।


আমাদের উড়াউড়ির খেলা শেষ হলে
তোমার গোল মুখটা আগুনের ফুলকির মতো
ছিটকে ছিটকে পড়ছে আমার হৃদপিণ্ডে
কিন্তু কি আশ্চর্য একটুও পুড়ছিনা আমি!


তারপর হঠাত এক পশলা বৃষ্টিতে
সমস্ত সবুজের হাত,পা,নড়ে উঠল
দু’জনেই তুমুল ভিজলাম বৃষ্টিতে,
আমি হলাম জল ---
আর তুমি খুব সহজেই জলীয়বাষ্প হয়ে  
মিশে গেলে বাতাসে !


ভোর রাত্রিতে কপালে কিসের যেন উষ্ণ স্পর্শ
দেখি, তোমার আঙুলের ডগায় চক চক করছে
মহামূল্যবান সব মুনি মাণিক্য
আর আমি কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবো
কোন আংগুলে চুমো দিবো
কোন আঙুলটা বুকে রাখবো
সেই ভাবনাতে যখন অস্থির


হঠাত চোখে কালো সামিয়ানা টাঙিয়ে দিল তোমার চুল
ভাঙ্গিয়ে দিয়ে আমার পুরাতন যত ভুল।


তারপর আমরা পরস্পরের চোখে তাকিয়ে থাকি নির্নিমেষ
মৃত মাছের চোখের মতো সাদা আমাদের চোখ;
যেখানে কোন আনন্দ নেই, বিষাদ নেই, অপমান নেই,
গ্লানি নেই, অশ্রু নেই শুধু নিরব আত্মসমর্পণ!


একসময় পরস্পরের নাড়ি ধরে হাঁটতে হাঁটতে
আমরা পৌছে গেলাম একটি প্রাচীন গুহার মুখের কাছে
তুমি বললে, দেখ তো চিনতে পারো কিনা?
পারো নি তো?


এটাই আমাদের পাপ স্খলনের একমাত্র পথ
এই পথ দিয়েই মুক্তির আলো আসবে
এই পথ দিয়েই আমাদের মস্তিস্ক পাবে অক্সিজেন
এই পথ দিয়েই জল আর হাওয়ার ঘুর্ণিতে ঘুরতে ঘুরতে
আগুনে পুড়তে পুড়তে দেবতাদের চৌহদ্দি ছেড়ে
প্রাণ আসবে পৃথিবীতে ।


এসো আমারা পরস্পরের হাত ধরে
জীবনের জন্য প্রার্থনা করি এখানে বসে
আমাদের উচ্চারণ ধ্বনিত হোক পাখির গানের মতো
নদীর কলতানের মতো, ভাসিয়ে নিক সমস্ত অরণ্যকে
জীবনের মহা তোড়ণের দিকে।।