তিরিশ বছর একা থাকার পর মনে হলো এতোদিন তুই
আমার সাথেই আছিস, বর্ণচোরা অক্ষর উহ্য—উচ্চারণহীন !  
যে যার মতো সব গুছিয়ে নিল—সংসার, ভিটেমাটি
এমন কি ভালোবাসা
অনেকের বেকারত্ব ঘুচে গেল, ফড়িংয়ের পিছে
ছুটতে ছুটতে অনেক প্রজাপতিই এখন পণ্য
গণ্যমান্য অনেকেরই উৎপাত মুণ্ডু ধরে টানে—রাজনীতিটা ঠিক
বুঝিনা বলে, টিকিট কেটে বাংলা সিনেমা দেখি হলে
ছবির মতো ভেসে ওঠে সব, ছবির মতো—দেশ কাল মানুষ  
টো টো দুপুর কাঁচারাস্তা, একটা ছোট লাল সাইকেল
বুকের ওপর বেল বাজাতে বাজাতে সাঁই সাঁই করে চলে গেল
দৃশ্যের অন্তরালে
নদীর দিকে নেমে গেল—সুগন্ধী বিকেল
আদিবাসী রমনীদের ঢল কোলাহল      
হারিকেন জ্বালানো একটি সন্ধ্যাকে কিছুতেই পিছু ছাড়াতে পারি না
ছাতা হাতে আগন্তুককে দেখে চিনতে পারি না,
সাদা ফতুয়ার পকেটে
কলমের লাল নীল খাপ, হয়তো স্কুল মাষ্টার—কী বুঝে যে,
পিঠে চাপড় মেরে বলেছিল—
‘সাব্বাস বেটা—একদিন তুই অনেক বড় হবি’  
শুকনো আঙুলে ওই বড় হওয়ার অভিধান ঘাটতে ঘাটতে
টের পাইনি কখন যে মুখ থুবড়ে পড়ে গেছি কাদা জলে
তুই কি আজও ঘার ধরে টেনে তুলবি না, চোখ রাঙিয়ে একটুও
শাসাবি না আমাকে ?
কী এমন শান্তি পেলি বল, তিরিশ বছর সাথে থেকেও
এমন নিঃসঙ্গ রাখলি
দেখ, এখন আমার মাথা ভর্তি অন্ধকার, ঘোর অন্ধকার
তবু কী করে যেন হাতের নাগালেই সব কিছু পাই, কিন্তু ভালবাসা ?  


আজও মনে করতে পারি না, ঠিক কোন সকালটায় পাখির ডাকে  
আমার প্রথম ঘুম ভেঙেছিল