অব্যক্ত বেদনা
বোরহানুল ইসলাম লিটন
====================৥৥৥


স্তব্ধ দাঁড়িয়ে থাকা পুকুর পাড়ের ঐ তালগাছটা
গর্বে যেন দূর আকাশের নীলিমা ছুঁয়েছে,
তারই আড়ালে শেষ বিকেলের সূর্যটা
টকটকে লাল বর্ণ গাত্রে মেখে অর্ধ বৃত্ত আকার ধারণ করেছে।
অভাগিনী মা দাঁড়িয়ে উঠোন বাতায়,
আজ আসছে তার বুকের মানিক জনমের তরে,
আর কখনো যাবে না কাজের তালাশে
কোন শহরে অথবা অচিন বন্দরে।
আলমারির তাকে সাজিয়ে রেখেছে
নাড়ু মুড়ি চিড়ে ভরা কৌটা সারি সারি,
ছোট বেলায় করতো খুবই জ্বালাতন
খাবার না পেলে বারে বারে দিত আড়ি।
ডুবে গেলো সূর্য
আলো আঁধার তখনো শুরু করেনি লুকোচুরি খেলা,
মায়ের অন্তরে অবাধে বসেছে
অনুমতি বিনে শঙ্কা ভীতির মেলা।
হঠাৎ অদূরে দেখলো ক’জনা লোক ছুটে আসছে
তারই বাড়ির দিকে মুখগুলো সব মলিন,
কাঁধে করে বয়ে এনেছে ভয়ংকর সুন্দর লম্বাটে এক কফিন।
কাঁদেনি মাতা, যতনে হৃদয় করেছে শক্ত,
তবু অজান্তে হৃদয় থেকে গড়ে পড়েছে ক’ফোটা তাজা রক্ত।
কেউ বুঝেনি অন্তরের ব্যথা,
শুধু ঘরের চালে বসে থাকা শালিকটা
আর কোনদিন ডাকে নি, হয়তো বুঝেছিল মনের কথা।
একদিন মা ও চলে গেলো ......
যাবার আগে দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছিল
’হায় দয়াময় এমন ভয়ংকর সুন্দর কফিনে
কোন জীবিত মায়ের সন্তান কখনো যেন অকালে না ঝরে।’


======================৥৥৥
পাঁচুপুর, আত্রাই, নওগাঁ।
০৫/০৭/২০২০ইং।