জয়নাল আবেদীন
বোরহানুল ইসলাম লিটন
====================
জয়নাল আবেদীন
মায়ের কবরে দাঁড়ায়ে রয়েছে
মুখটি তার মলিন।
মাতা বিনে এই ধরণীর বুকে
ছিল না তো কেউ তার,
আজ সেও গেছে বিধাতার কাছে
রুদ্ধ করিয়া দ্বার।
অঝোর ধারায় ঝরিতেছে জল
বক্ষ ভাসায়ে কয়,
চল না জননী তুই ছাড়া মোর
সবি যে আঁধার ময়।
কে দিবে আমায় গোসল করায়ে
কোথা পাব আজ ভাত?
তুই বিনে মোর কেটেছে কি কভু
একেলা একটা রাত?
পানিতে নামিলে উঠিতে চাই না
শুনি নাকো বলে কথা,
আজ বুঝি খুব রাগ করেছিস
পেয়ে অন্তরে ব্যথা?
খেলিবার কালে ধুলি মাখি বলে
কতো যে বকুনি তোর,
ধরিতে এলেই সচকিত হয়ে
তখনি দিয়েছি দোড়।
ইসকুলে আমি যাবো নাকো বলে
পালিয়ে যেতাম চলে,
বাড়ি বাড়ি তুই খুঁজে ফিরতিস
মোর নাম বলে বলে।
আজ বুঝি তাই ঘুমে রয়েছিস
খুব করে অভিমান?
এই চেয়ে দ্যাখ অপরাধ মেনে
ধরেছি দু’খানি কান।
ওগো দয়াময় জগতের স্বামী
তুমি অভাগা র ধন,
দাও না ফিরায়ে জননী আমার
ভেবে আপনার জন!
জন্মের পরে পিতাকে দেখিনি
মাতা ছিলো মোর সব,
আজ কেন ফেলে গোরে লুকাইলো
বন্ধ করিয়া রব?
উঠ না জননী বাড়ি ফিরে চল
থাকবো দু’জনা ঘরে,
নইলে যে তোরে ঠাণ্ডা লাগিয়া
ধরিবে সর্দি জ্বরে।
আজ থেকে আর করবো না আমি
কোনদিন বাঁদরামি,
কান মলা দিবি যদি বা কখনো
করে বসি দুষ্টমী।
উঠবি না তুই? এই শুইলাম
তোর দু’পায়ের তলে,
কবরের মাটি ভিজায়ে ফেলিব
মোর নয়নের জলে।
তাতে যদি জেগে না উঠিস তুই
দিয়ে অভিমানে আড়ি,
ঘুমায়ে পড়িব জনমের তরে
কখনো যাবো না বাড়ি।
হায় দয়াময় সাধ্য কি আছে
বুঝিবে তোমার শান?
মাতৃ সেবায় মিলবে না বলো
ভব জীবনের ত্রাণ?
কোনদিন আর বাড়িতে ফিরে নি
জয়নাল আবেদীন,
তবে কি তাহার স্মৃতি হয়ে রবে
জনমনে অমলিন??
(কবিতাটি আমার অত্যন্ত প্রিয়জন
শ্রী ময়না কর্মকার কে উৎসর্গ করলাম।)
===================
পাঁচুপুর, আত্রাই, নওগাঁ।
০৪/০৮/২০২০ইং।