পরাণের লক্ষ্মী
===========================@@@


ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ কেটে যায় পরাণ মাঝির নাও,
পাল যে বিষম টান হয়েছে লেগে পূবাল বাও।
যাত্রীরা আজ আসছে দলে হচ্ছে ভাড়া ঢের,
খ্যাপ নিয়ে তাই এপার-ওপার চলছে ধেয়ে ফের।
দেখলো সে বেশ স্বচ্ছ আকাশ হাসছে তাতে সূর,
গাইছে দু’পাড় পাখ-পাখালি বৃক্ষে সুমধুর।
ভর যৌবনা জল নেচে তার তুললো মনে ঝড়,
স্মৃতির পটে আঁকলো সে এক ছোট্ট নিবিড় ঘর।


হাসছে যে তার লক্ষ্মী রাণী সেই ঘরে আজ বসি,
উচ্ছ্বাসে ঢের খড়ের চালে পড়ছে তারা খসি।
চতুর্দিকে ফুল ফুটে তা দেখতে করে পালা,
ঝির ঝিরে বায় ‍সুবাস দিয়ে চলছে গেঁথে মালা।
ঝাপটায়ে পাখ ডাহুক ডেকে বাঁশির সুরের মতো,
ধারার বুকের রুক্ষতা সব মুছছে অবিরত।
চাঁদ উঠে সেই নিশির বুকে জ্যোৎস্না দিয়ে ঢেলে,
আবেশ ছুঁড়ে লাজ বদনে তুলছে আশা জ্বেলে।


দৃশ্য স্মরে খুব খুশি আজ পরাণ মাঝির মন,
নায়ের তালে গুনছে সে তাই রূপ সায়রের ক্ষণ।
আনমনে ফের বললো শুধু ‘লক্ষ্মী রে তুই জান,
আর ক’টা দিন কর না সবুর বুনবো মোরা ধান!’
ঘর হবে এই ভাড়ার টাকায় থাকবে তাতে সুখ,
করবো তোরে প্রেম সোহাগী রোজ কেড়ে সব দুখ।
নিস দেখে তুই ঠিক পেয়ে তা করবে নিশি ধুম,
এহেন কালে হুট করে তার ভেঙে গেলো ঘুম।


===========================@@@
পাঁচুপুর, আত্রাই, নওগাঁ।
৩০/০৩/২০২৩ইং।



@বোরহানুল ইসলাম লিটন