চপল পায়ে চলবি ওরে, খুলবি আজ ব্যাথার দান
ভ্রুর পানে ক্রুর হাসি, দেখবি ওরে খোদার শান
দ্বন্দ্ব মনে যে জন ফেরে, বুঝবি ওরে ভণ্ড রাজ
মুক্তি নিয়ে ফেরত এলে, পরায় তাকে বীরের সাঁজ
দোদুল মনে দুল খাবে রে, উড়ে যাবে সকল ভুল
ত্যাজি ঘোড়া পায়ে দলি, হাতে নিয়ে বকুল ফুল
বন্ধুর পথে ঝাপটে ধরে, ঘাপটি মেরে থাক নীরব
ঝঞ্জা তালে হেলেদুলে, অন্যায় দেখে হোস সরব।


মরুর বালু আসবে তেড়ে, দেখবি শুধু প্রলয় নাচ
টুটে যাবে খুঁটির গোঁড়া, কৃষ্ণ মেঘের ফেটে কাঁচ
আঁধার ভয়ে শকুন ছায়া, ডিঙে ধরি ভেঙে ধ্যান
রুদ্র দ্বারে কামড়ে সাপ, পুবাল হাওয়ায় খুশির বান
অস্ত রবি ত্রস্ত হয়ে, গুনে যায় রাত প্রহর
জুই বেলির গন্ধে মাতাল, উঠবে জেগে গ্রাম শহর
রণ প্রাতের প্রার্থনা হে, স্বার্থবিহীন কর লড়াই
খোদার চাওয়ায় সত্য, শর্তবিহীন একলা গড়াই।


রক্তে আমার ছোবল ব্যাথা, কপাল বেয়ে ঝড়ে ঘাম
গুরু আমার করেন শুরু, লিখব শুধু আমার নাম
বিশ্ব বুকে ধরাই আগুন, ধরে যত দুখের হাত
চিবিয়ে খাওয়া মর্ম ব্যাথা, কর্ম দিয়ে ভরাই জাত
ডরায় যত খামখেয়ালি, ঊর্ধ্বকাশে ধুঁয়ার দল
তাম্র লিপি ভেঙে খাই, ব্যয় করে শরীর বল
খোদা আমার বন্ধু ওরে, জেগে উঠি তার ছোঁয়ায়
স্বরূপ রূপে রূপের খেলা, বিজলী পরে রাত পোহায়।


গান বন্দনায় ঝরে মান, দুখিদের শেষ সম্বল
প্রেমের অর্ঘে লুটি স্বর্গ, অত্যাচারির তিক্ত অম্বল
বাঁকা চোখে খোলা তলোয়ার, রুধবে কে ঝড়ের বেগ
বন্ধু হয়ে ধরেছি হাত, ছিন্ন করি দৈন্য মেঘ
ভীরু কেহ বলে আবার, শশীর গায়ে বিষ মাখি
কালা পানির ঝর্ণা হয়ে, কণ্ঠে মধু ফুল পাখি
দানকে কভু নেই না ফেরত, বদল করি সকল সুখ
মুখ ফিরিয়ে নাও গো যদি, পেতে দেব খোলা বুক।


ধূলার পরশ গায়ে মেখে, উড়ে বেড়াই বিশ্ব পাড়
তিথির ঘরে স্মৃতি দিয়ে, মহা দানের বাড়াই ধার
চাবুক রাখি চরণ পরে, কণ্ঠে কভু দিলে হাঁক
নীল গগণ ভেঙে পড়ে, সোজা হয় নদীর বাঁক
খুঁটির গোঁড়া গৃহ হারা, কে দেবে রে আজকে দুল
বেহুশ আমি হুশ করি না, চিবিয়ে খাই ধুতরা ফুল
রুগ্ন দেহে যুগ্ন গান, ঝড়ের সাথে পাঞ্জা লড়
নীতি ছাড়া প্রীতির খেয়ায়, ভেঙে ফেলি কীটের ঘর।


আশিস পড়ায় কাঁসার থালা, হাসির মাঝে মৃত্যু সুর
রক্ত স্রোতে পাক খাবি, উড়বে জীবন মরণ পুর
লতার রশি বাঁধি গলে, সাঁতার কাটি সাগর জলে
পাথর পড়ে হাড় বাটি, ঘাড় রাখি মুক্ত শূলে
বিদ্ধ তীর সিদ্ধ করে, রাখি সব গোলায় ভরে
শূন্য মাঝে দৈন্য দশা, ছুড়ি সব মাতাল ঘোরে
প্রাণের পিয়াস ঘিঞ্জি পথে, বঞ্চিত গায় ব্যথার গান
গ্রহ মাঝে ক্ষুদ্র তাঁরা, জীবন বিলায় করে দান।


বিজলী ঝলক দেব আমি, অলক পড়া কালো গায়
ধরিত্রী খাজনা দেবে, সাথে আছে প্রভুর সাঁয়
নভ ছুব শঙ্কা খুলে, ভীরুর পানে আগাই গাল
শকুন মারি শ্বাসে পোড়াই, চোখে চোখে ফেলে জাল
ঘিরে ধরা জন্তু পায়ে, ফিরে এসে নেব শোধ
দেখব আমি আসার পরে, কে করে আমায় রোধ।