আমি রানু! কৈশরে আমার বিয়ে হয়ে যায় জীবন সমন্ধে কিছু বুঝে উঠার আগেই,
যাকে বলে বাল্য বিবাহ, ফ্রগ পরা একটি মেয়ে সারাদিন বন্ধু বান্ধবের সাথে দস্যিপনা করা,
ফড়িং আর প্রজাপতি ধরা, ঝিংগে ফুলের সাথে আড়ি, জলপাই গাছে উঠে জলপাই পাড়া,
সব কিছু যেন স্বপ্নের মত মনে হতো।


হঠাৎ একদিন সব স্বপ্ন যেন লাল মালা মাড়িতে আটকিয়ে গেল ! আমি বউ হয়ে গেলাম,
শ্বশুর শ্বাশুড়ী, দেবর ননদ, আত্বীয় স্বজন আমার চারিদিকে দেয়াল হয়ে উঠলো।


বাল্য বিবাহ কি ! এখন এই বয়সে এসে বুঝেছি, বাল্যকাল, কৈশর, যৌবন বিবর্তনের
ছোট ছোট চাওয়া পাওয়া গুলো, হৃদয়ে স্তরে স্তরে না পাওয়ার যন্ত্রনা জমিয়ে রেখেছি।
কখনো কাউকে বলতে পারিনি, আমি যে অন্য এক জনের বউ।


বৈশাখ মাস বাহিরে ঝম ঝম বৃষ্টি আর বাতাস বইছে জানালা বন্ধ করতে গিয়ে বাহিরে চোখ গেল
দেখি, আম গাছের গোড়ায় আম পড়ে আছে, ছোট বাচ্চারা প্রতিযোগীতা করে আম কুড়োচ্ছে,
চকিতে বুকের ভিতর মুচোড় দিয়ে উঠলো আর বাল্যকালের স্মৃতি গুলো চোখের সামনে
একটার পর একটা ভেসে আসছে লাগল।


মনে দুঃখ হয় আমার জীবনের রঙ্গিন পাতা গুলো ঐ লাল মালা শাড়ীর ভিতর কালো কালো দাগ
ভেসে উঠে আছে কখনো আর রঙ্গিন করা যাবে না।