ফুট ফুটে জোৎন্সা রাত ইছামতি নদীর ঘাট, সন্ধ্যা রাতে
আমরা দু’জন ঘাটে বসে জীবনের হাল খাতার পড়তা বিছিয়ে  
আলোচনা চলছে, কি পেলাম আর কি পেলাম না।

ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, শিয়ালের হাঁক, বালি হাঁসের মেলা
নিসুতি রাতের শুন-শান শব্দ আর আমাদের নিরবতার
বাহিরে কোন আলোচনা ছিল না। মাঝে মধ্যে দু’এক জন
পথচারীর হেঁটে যাওয়া, রাতের রুপ দেখতে আসা উৎসুক
জনতা ছাড়া কেউ ছিল না।

পিছনের পাতা উল্টাতে মনে পড়ে, প্রায় তিরিশ বছর পর
সংসার ছেলে মেয়ে চাকুরী ইত্যাদি নিয়ে চলছে কে কতটুকু
সুখি বা আনন্দে আছে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

নদীর জলে কচুরী পানা ধীরে ধীরে আমাদের ছেড়ে স্রোতে
ভেসে যাচ্ছে, জোৎন্সার আলো, শ্রাবণ মাসের মেঘের ছায়া,
ধুঁয়ার মত কুন্ডোলী পাঁকিয়ে চাঁদকে গ্রাস করছে, যেমন করে
গ্রাস করেছে আমাদের ফেলে আসা দিন গুলি।

আজ থেকে তিরিশ বছর আগে এভাবে বসার একটা আবেগ ছিল,
ভালবাসা ছিল, ছিল মনের মাঝে অনেক স্বপ্ন কিন্ত আজ যেন
সে সবের কমতি অনুভব করলাম! জীবনের হাল খাতার লাভ-
ক্ষতির হিসাব ছাড়া অন্য কোন আলোচনা উঠে এলো না।  

হৃদয়ের শূন্যতা নিয়ে আলোচনার এক ফাঁকে গৃহে ফেরা, শূন্যতা
শূন্যতার জায়গায় রয়ে গেল। জীবনটা মনে হলো এমনি পরিস্কার
করে বুঝা যায় না।
হয়তো বা মৃত্যুর পুর্ব দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে !