আমি নারী জন্ম নিয়েছি মাতৃগর্ভে
বেড়ে উঠেছি পরিবারের কড়া শাসনে
স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে কিন্তু তখন বুঝিনি,
পাশের বাড়ীর মেয়েদের একই অবস্থা;


কঠিন শাষণে কখন কৈশোর থেকে যৌবনে পা
দিয়েছি বুঝতে পারিনি, রক্ত চোক্ষুর সামনে ,
সবার দৃষ্টি আমার দিকে কামনায়, নারী প্রথম
নির্যাতিত হয় পরিবারের কাছের মানুষের কাছে?


ঐসব ও জোর করে, করে ফেলে কিছু বুঝার আগে
ধর্ষণের প্রথম পাঠ বলতে পারেন, আমি নারী!
নির্যাতন, ধর্ষণ, অপমান, সম্পদ থেকে বঞ্চিত হওয়া
সৃষ্টিকর্তা জন্মের সময় সাথে পাঠিয়ে দিয়েছে,
অধিকার হিসাবে?  


দিনের আলোয়, রাতের অন্ধকারে, সুযোগের অপেক্ষায়
পুরুষ প্রজাতির কামনার লোলুপ দৃষ্টি, জিঘাংসার দু’হাত
আমার দিকে ধ্যেয়ে আসে, কত বার বলেন, কত বার
যুদ্ধো করে নিজেকে ঠিক রাখব, আমাদের স্ব-জাতি!
  
তাদের কথা বলছেন, তারা তো এক প্রকার তাদের
পক্ষে, উভয়ের সাথে যুদ্ধো করে কত দিন নিজেকে
বাঁচিয়ে রাখা যায় বলেন তো! আমি নারী,
যৌবনের উন্মাদনা, হৃদয়ের টানে, ভালোবেসে ছিলাম
শুভংকর কে!!


ভালবেসে ছিলাম নিজের জীবনের চেয়েও বেশী, স্বপ্ন
দেখেছিলাম আমার সংসার হবে, হবে নিজস্ব ভুবন,
হাসব-খেলবো, মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ে বেড়াব আকাশে,
এক দিন শুভংকরের ডাকে ,ভালবাসার টানে বাড়ী ছেড়ে
বেরিয়ে পড়লাম অজানার পথে!


কিন্তু! শুভংকরের দেয়া ঠিকানা মত সে আর এলো না,
আমার কোন কিছুই মাথায় আস ছিলো না, চোখে মুখে
অন্ধকার, বাড়ী ফিরে যাবার উপায় নাই, আত্মীয়-স্বজনের
বাড়ীর পরিষ্কার ঠিকানা আমার জানা নাই,
যা হওয়ার তাই হলো!


কত গুলো পুরুষ নামী হায়েনা, নরপশু আমাকে ধর্ষণ
করলো, সমস্ত শরীরে কামনার দাগ, নখের আঁচড় দেহে
মানচিত্র এঁকে দিয়েছে, যা কোন দিনই মুছা র নয়,
আত্মহত্যার অনেক বার চেষ্টা করেছি পারিনি,
আমি জন্ম দিলাম সন্তান, সন্তান কার, আমি জানি না?  


জানেন! আমি এখন গোয়ালন্দের বেশ্যা পট্টি তে থাকি,
আমার একটি ছোট ঘর আছে, নিজের মত করে সাজিয়ে
রেখেছি, প্রতিদিন দিনে রাতে সকাল সন্ধ্যায় অনেক
শুভংকর আসে আমার ঘরে, তাদের যৌন ক্ষুধা মিটায়।


জানি না! সৃষ্টিকর্তা আমার ভাগ্যে এই কর্ম লিখে রেখে
ছিলো কিনা, আপনারা বিবেচনা করবেন? তবে আমার ছেলে
তার বাবার নাম জিজ্ঞাসা করে, আমি কার নাম বলব,
আপনারা বলে দিন! আমি যে নারী?