আমি ভব ঘুরে পথিক, পথ চলা আমার কাজ
ঘুমের মাঝে কাল রাতে হেঁটেছি অনেকটা পথ
ক্লান্ত আষাঢ় দেহ পৌঁছে গেছি জন্ম স্থান,
যখন পোঁছালাম, সেখানে দেখতে পেলাম।


বাড়ীর বারান্দা ঠিক আগের মতই, কোন
পরিবর্তন হয়নি, প্রতিবেশীদের আনাগোনা,
সকলে বসে আড্ডা মারা আগের মতই আছে
মাঝে গ্রামে আসা হয়নি পঁচিশ বছর!  


কেন! কিসের জন্য, এ আলাপে নাই বা গেলাম,
কৃষকেরা সেই আগের মত কঠোর পরিশ্রম করে,
ফসল ফলায় কিন্তু তারা কি তাতে সুখি!
ভিজে মাটির মিঠে গন্ধ ভেসে আসছে চারিদিকে
ফিরে যাই সেই ছোট বেলায়।


মায়ের নির্দেশ, সকালে পড়া শেষ করে কৃষাণ
কৃষাণী দের জন্য মাথায় করে খাবার মাঠে নেয়া,
সুযোগ বুঝে নাঙ্গলের মুঠা ধরে জমিতে নাঙ্গল দেয়া
সবজি ক্ষেতে পানি দেয়া, গরু গোসল করানো,
লুঙ্গি কাচা মেরে পুকুরে সাঁতার কাটা ইত্যাদি।


পঁচিশ বছর আগে মাঠ থেকে ফেরার পথে পাল
পাড়ার গৌরী কে দেখা আর আজকে দেখা ঠিক
আগের মতই আছে, সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারীনি,
সেই মুচকি হাসি, হাসলে সেই আগের মত গালে
টোল পড়ে, বিয়ে হয়েছে, দু’বাচ্চার মা কিন্তু
এতটুকু বদলাইনি!


সহাস্যে বলল, কেমন আছো তুমি! আমার বুকের
ভিতর আড়ষ্টতা অনুভব করলাম, পুরানো ভালবাসা
চোখের সামনে ভেসে উঠে, কি অদ্ভুত গৌরী
জিজ্ঞাসা করল তোমার কি পুরান কথা মনে পড়ছে,
পড়ার কথা আমার তো মনে পড়ছে! হা হা করে প্রাণ
খোলা হাসি মুখে শাড়ীর আঁচল চেপে।
আমার মাথায় কত কি ঘুরপাক করছিল!


ঘুমের মাঝে হঠাৎ দেখি শত শত মৃত আত্মা ছট পট করছে
ওরা বলে উঠে, রবি তুই এসেছিস,” আমরা নিজেকে হারিয়ে
ফেলেছি,” ওদের আমি বললাম, “ আবার শুরু কর, আবার
ঘুরে দাঁড়া।” তারা বলল অনেক দেরি হয়ে গেছে, পায়ের নিচে
শিকড় গজিয়েছে, যা অনেক দুরে মাটির নীচে চলে গেছে!
আমি যতই উপড়ে ফেলতে চায় না কেন!
অতো গভীরে পৌঁছাতে পারিনা।