কখনো যদি দুহাত বাড়িয়ে বলো, ‘ফিরে এসো’
আবার আপ্লুত হয়ে যাব সন্দেহ নেই,
কিন্তু আর কি ফেরা হবে?
কখনো, কোনদিনও অন্তত একটি বারের জন্যে
ফেলে আসা সেই পথ ধরে?
কত কাল পেরিয়ে গেছে ভাবতে পারো?
মনে করতে পারো, তুমি আর আমি
শেষ কবে এই পথ ধরে হেঁটেছিলাম?
শ্রাবণের প্রথম বর্ষাই আমাদের
পদচিহ্ন মুছে দিয়ে গেছে।
মৃদুমন্দ বাতাসে দোল খাওয়া কচি পাতা,
সবুজ দুর্বাঘাস কিংবা অনাদরে বেড়ে উঠা
বুনোলতায় থোকা থোকা ফুল, রঙিন প্রজাপতির দল,
ডানা মেলে উড়ে চলা নাম না যানা পাখিদের ঝাঁক;
হয়তো কিছু কথা, কিছু অনুভব ধরে রেখেছিলো।
কিন্তু হায়, আজ বহুদিন পর
সেই কচি পাতাগুলো নিশ্চয় ঝরে পড়েছে,
মজে গেছে সবুজ ঘাসগুলিও;
বুনো ফুলের ঋতু শেষ,
একখানা কাঠবাদাম গাছের গায়ে
জড়িয়ে আছে শুধু প্রাণহীন লতাটা;
রঙিন প্রজাপতির সংক্ষিপ্ত জীবনটা বোধহয়
অনেক আনন্দের ছিলো;
আর সেই ডানা মেলে উড়ে চলা নাম না যানা
পাখিদের ঝাঁক খুঁজে পাইনি কখনো।


আজ তুমি প্রশ্ন করতে পারো,
অনুভূতিগুলো সত্যিই কি হাড়িয়ে গেলো?
আমি বলব- নাহ হাড়িয়ে যায়নি,
ওগুলো যে হাড়িয়ে যাবার নয়;
কিভাবে হারিয়ে যেতে পারে বলো?
সবগুলো মধুর স্মৃতিকে যে আমি
যত্ন করে রেখে দিয়েছি
হৃদয়ের অনেকটা গভীরে।
আমি জানি, তুমিই, শুধু তুমিই
আমাকে ভালবাসতে পারো নিবীর করে,
কিন্তু ফেরার পথটাও যে আমার জন্যে
সংকীর্ণ করে দিলে তুমি!
মাঝে মাঝে ভাবি,
সবকিছুর জন্যে তোমাকে ক্ষমা করে দেই;
যতবার আঘাত করেছ ততবার ক্ষমা করি।
হ্যাঁ আমি তা পারি, করেছিও তা,
কিন্তু আমি যে আবার তোমার দ্বারপ্রার্থী হতে পারি না;
তুমি তো আর সেই তুমি নও, বদলে গেছো অনেক খানি।
তুমি যে নিজেকে অন্যের দ্বারপ্রার্থি করেছো,
কলুষিত করেছো!


জানতো, পূজারী হয়েও কলঙ্কিত দেবীকে
মাথায় নিয়ে হাটা যায় না।
দেবীর পায়ে পুজোর ফুলও দেয়া যায় না,
ফুলগুলো আর্তনাদ করে উঠে;
তারা যে বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলো,
পুষ্পার্ঘ যে তুমি পায়ে ঠেলে দিয়েছিলে।
এমন উড়ালচন্ডি দেবীকে পুজোর বেদিতেও
অস্পৃশ্য লাগে; বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠে,
দীর্ঘস্বাস ছাড়ে মন্দিরের পাথুরে দেয়াল।


বিনয়নম্র পূজারী তখন বিষাদক্লিষ্ঠ;
খুনে খুনে লোহিত পাঁজর বুঝি আর সইতে পারছে না।
তাকে যে এক খানা পুণ্য করতে হবে,
মহার্ঘ পুণ্য, হ্যাঁ হ্যাঁ সত্যিই করতে হবে,
কোন এক মাহেন্দ্র ক্ষণে
সুর্য দেবতাকে সাক্ষী রেখে, “প্রতিমা বিসর্জন”!
হ্যাঁ আমিও তাই করেছি,
তোমাকে বিসর্জন দিয়েছি “দেবী”!