কতই বা বয়স, পাঁচ কি বা ছয়, খুব বেশি তো হয়ত সাত,
তেপান্তরের মাঠে তখন রোজ করছি ডাকাত মাত ।
রোজ ঘুমোতে যাবার আগে বীরপুরুষের নকল খেলা,
আকাশ জুড়ে রবীন্দ্রনাথ সকাল, দুপুর সন্ধেবেলা ।
কিশোরবেলার সেই সময়ে লাগতো যখন ভীষণ একা,
বুকের ভেতর উথাল পাথাল কোথায় পাব সুখের দেখা ।
দারুণ দহন মনের আগুন, অরুপ রতন সেই তাকে চাই,
আধেক বোঝা, আধেক অবুঝ, কেউ বোঝে না দুঃখ টা তাই ।
আবছা কারো রুপের রেখা, আবছা কারো ভালবাসা,
কে বোঝাবে স্বস্তি কোথায় সময় টা যে সর্বনাশা ।
ঘুমের মধ্যে কাঁদছি যখন, জাগরণে কাটছে রাত,
মন্দ ভালোর সীমারেখা চিনিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ।
আধেক ঘুমে, নয়ন চুমে বলে গেলেন দুয়ারে তোর
দ্বন্দদ্বিধা থাক না খানিক, এই ত জীবন খুলে দে দোর ।
ভোরের আলো আনবে খুশি, নতুন চোখে দেখবি ঠিক,
কান্না হাসি নিয়েই জীবন ছড়িয়ে আছে দিগবিদিক ।
এমন করে কে মেপেছেন মানব মনের গভীর মাপ,
কোনটা শুভ, কি অশুভ, কোনটা পুণ্য, কিসেই বা পাপ ।
আমিই তো নয়, বাংলাদেশের লক্ষ কোটি ছেলেমেয়ে,
মুগ্ধ হলাম, ধন্য হলাম সৃষ্টি ওনার সঙ্গে পেয়ে ।
লেখায় গানে দেখতে পেলাম যা চাই তার স্নিগ্ধ ছবি,
লাগামছাড়া দিন গুলোতে শান্তি দিলেন বিশ্বকবি ।
রুপ চেনালেন, রঙ ভরালেন, বর্ণ এল, গন্ধ ঢোকে,
যুবক হলাম, ষাটোত্তরে বিশ্ব দেখি ওনার চোখে ।
শোকের আসর, সুখের বাসর, সুখ অসুখের ঘাত প্রতিঘাত,
বিভোর হয়ে কাটিয়ে দিতে শিখিয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ ।
জীবনপথে এত বছর কাটিয়ে এসে বলতে পারি,
আধেক আমার জড়িয়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ – সৃষ্টি তাঁরই ।
আজ মনে হয় এমন দিনে যখন তাঁকে করছি স্মরণ ,
ধন্য হতাম যদি পেতাম কবি তোমার ছুঁতে চরণ ।
বাইশে শ্রাবন আজকে যখন বাজছে তোমার স্মরণ বীণ,
রবীন্দ্রনাথ – এই অধমের শ্রদ্ধাভরা প্রণাম নিন ।