" ওহে কাজল নয়না,
তোমার আলতা রাঙ্গা পায়ে জড়ানো নুপুর ধ্বনি।
এই পরদেশে আমায় যেন উপহার দেয়,
অনিদ্র কিছু রাত "।
সুকান্তর দেওয়া এই শেষ চিঠিখানি,
ক্যামেলিয়া রোজ পড়ে।
বেলা দুই নিয়ম করে আনমনা-ই হাসে।
অদৃশ্য কল্পনায় সুকান্তকে গভীর ভাবে খুঁজে।
আর ক্যামেলিয়ার ঠিকানা হতে চিঠি যায়,
সুকান্তর ঠিকানায়।
দিন যায়, রাত যায়, মাস-ও যায়।
পুরনো দিনপঞ্জিতে আটকে থাকা বছর,
অস্থির হয়ে উঠে নতুন রূপ নিতে।
অস্থির হয় ক্যামেলিয়ার মন,
সুকান্তর চিঠি পেতে।
কালি জমা চোখ, জীর্ণ দেহ।
বসে থাকে বিধ্বঃস্ত ক্যামেলিয়া চিঠির আশায়।
নতুন বছর প্রথম প্রহরে চিঠি আসে,
সুগন্ধী দেওয়া চিঠিতে লেখা থাকে —
" জমিদার পুত্র সুকান্তের বিবাহে সকলে আমন্ত্রিত "।
এক বুক আশা নিয়ে ক্যামেলিয়া,
কাঁপা হাতে চিঠি খুলেছিলো।
দিন কয়েক পর ক্যামেলিয়ার ঠিকানা হতে চিঠি যায়।
চিঠি যায় সুকান্তের ঠিকানায়।
নব্য বিবাহিত সুকান্ত সই করে চিঠিখানা হাতে নেয়।
ক্যামেলিয়ার ঠিকানা দেখেই অভ্যেসবশত,
চিঠিখানা ফেলে দেয় পরম অবহেলায় বন্দী স্টোর রুমে।
যেখানে চিঠির স্তুপ আর ক্যামেলিয়ার অতৃপ্ত আত্মা,
নিঃশব্দ হাহাকার করে।