জানি না কবিরা তোমাকে নিয়ে লেখে না কেন,
তারা কি ভুলে যায় তোমার মূল্য?
আমি কিন্তু তোমাকে ভুলিনি বালিশ,
তুমি আমার সব দেখেছ।
আমার গভীর রাতের কান্নায়,
তুমি ছিলে আমার একান্ত আপন জন।
তুমি আমার চোখের জলের সাড়া দিয়েছিলে,
দিয়েছিলে চোখের জল মুছে
আমার করুণ অবস্থা দেখে,
ঘুমকে এনেছিলে ডেকে।
আমি তোমাকে ভুলবনা, বালিশ,
আমার ভাগের একাকীত্বের সময়ে,
তুমি ছিলে আমার আলিঙ্গন করার সাথী।
মানছি তুমি হয়ত প্রেমিকা নও আমার,
কিন্ত তোমার ভাঁজেও আমি গুজেছি আমার মুখ,
প্রাণপণে খুঁজেছি অধর,
না, পাইনি।
তাই তোমাকে মেনে নিয়েছি সেই ভাবে।
তোমাকে জড়িয়ে ধরে আমি হেসেছি।
যখন আমি আনন্দের নেশায়
তোমার বুকে আশ্রয় ছেয়েছিলাম,
সেদিনকেও তুমি ডেকে এনেছিলে
জাদুকরী গভীর এক ঘুমকে।
আমি পরের দিন সকালেও তোমায় ভুলিনি বালিশ।
তোমার ওপর ভর দিয়ে আমি পড়েছি,
হাজার কবিতা, হাজার গল্পও।
তোমার কোলে মাথা রেখে আমি ঘুরেছি হাজার দেশ,
শুনেছি হরেক শব্দ আর বেঁচেছি হাজার স্বপ্নে,
আমি জানি তোমার তুলোতে তুমি লুকিয়ে রাখ,
এক মায়াবী কোন যন্ত্র,
যে আমাকে নানা মন্ত্রে ভুলিয়ে রাখে,
দেখায় কত ছবি আর শোনায় কত গান।
না, বালিশ! আমার দুঃস্বপ্নের জন্য তুমি দায়ী নও,
সে তো আমার মনের দোষ,
আর দোষ এই মিথ্যে কথার পৃথিবীর।
তুমি তো খালি দাও, বালিশ,
কিছুই কি নেবে না?
আচ্ছা বালিশ তুমি কি অন্য সবাইকে
একই মন্ত্রে বশীভূত কর?
তারাও কি শুনেছে তোমার গান?
শুনেছে তোমার গল্পও?
তুমি কি তাদেরও অলীক কল্পনার উপহার দাও?
উত্তর দাও না কেন বালিশ,
তুমিও কি বাকি সবার মতন মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দাও?
তুমিও কি লুকিয়ে রাখ গভীর সত্যকে?
আমি তোমায় একান্ত ভাবে চাই বালিশ
যদি না পার, তাহলে
থেকো না আমার মৃত্যুশয্যায়,
জীবনের সঙ্কেত বেশে।