(আমার এক মাসিমা, অদিতি বসু রায়চৌধুরি তার চোখ আর দেহ দান করে গিয়েছিলেন। পিজি তে সেই দেহ দান করতে গিয়ে অনেক হ্যাপা হয়েছে, তবু তৃতীয় দিনে তারা গ্রহণ করেছে। অল্পশিক্ষিতা গ্রামীন এক গৃহবধূ মাসিমা মৃত্যুর ১১ বছর আগে নিজে থেকে গিয়ে সই করে এসেছিলেন অঙ্গীকারপত্রে। বাড়িতে এসে কেউ কেউ সই করিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তাদের উনি জবাব দিয়েছিলেন, "আমি এমন কেউ নই যে আমার বাড়িতে এসে সই করাবে। আমি নিজে যাব।" কাল তার পারলৌকিক কাজ সম্পন্ন হল)
.............................................।


হাসপাতালের দিকে দুটি রাস্তা চলে গেছে -
একটি দিয়ে মানুষ যায়, আরেকটি দিয়ে ফিরে আসে।


কেউ কেউ যায় আর ফেরে না
কেউ কেউ ফেরে, আর যায় না।


তৃতীয় এক পথ আছে জানে কেউ কেউ
তাঁরা জীবিত ফিরে এসে ফের যায়
মৃত্যুর পর দেহটা দিয়ে যায়
বিজ্ঞানের শবসাধনায়


জীবন আর মৃত্যুর আলো-আধারীর খেলায়
চোখ খোলা আর বোঁজার অবকাশে
কোনও এক অন্ধ এসে হাত পাতে –
'না পুড়িয়ে আমাকে দিয়ে যেও তোমার ও চোখদুটো।
আমি আস্বাদন করে নেব বিশ্বের রূপ-রস-বর্ণ’।


কেউ এসে বলে, 'তোমার মৃত শরীর থেকে
আমি শিখে নেব, কোন রোগ কোথায় বাসা বাঁধে,
কোথায় চালালে ছুরি বেঁচে যাবে তোমারই সন্তান’।


আঁধারের অধীশ্বর ভয় পায়
কবর খুঁড়ে তাঁর কঙ্কাল-কারবার বুঝি বন্ধ হয়


তবু কেউ কেউ বিশ্বমাতা অদিতি হন
স্বহস্তে নিজেরই দেহ দিয়ে যায়
সন্তানতুল্য ছাত্রদের হাতে
বিজ্ঞানের শবসাধনায়।
-----------------
কোন্নগর
১৬ নভেম্বর, ২০১৩