(এনামুল হক-এর স্মৃতিতে নিবেদিত। এই মানুষটি ৭৯ বছর বয়সে সম্প্রতি মারা গেলেন। ধর্মের বিভেদ মানতেন না। নিজের ধানজমি বেচে পাড়ার ছেলেদের ফুটবলের বুট কিনে দিয়েছেন। গোলার ধান বেঁচে পাড়ার যাত্রাদলের পোষাকের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর এক ছেলে ইমানুলের উদ্যোগে প্রতিবছর কলকাতায় ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে ‘একুশে’ আর পয়লা বৈশাখ সকালে ‘নববর্ষ উৎসব’ পালিত হয়।)
----------------------------------------------------


তোমার আজান শুনে ছুটে গেছি আশ্বিনের মাঠে
তোমার আজান শুনে শিশির মেখেছি লুটেপুটে
তোমার আজান শুনে বৃষ্টির ফোঁটারা ভিজিয়েছে ঘাস
তোমার আজানে শুনেছি গ্রীষ্ম দুপুরের দীর্ঘশ্বাস


আজানের সুরে সুরে রাতের কুয়াশা গেছে কেটে
আজানের সুরে সুরে মেঘের বাদল গেছে টুটে
আজানের সুরে সুরে গাঁয়ের মানুষ ছিল যত
গড়েছিল গ্রাম বুক বেধে, শত্রুরা দূরে ইতস্তত


তোমার আজান শুনে এ-গ্রামের হিন্দু-মুসলমান
একসঙ্গে গেয়েছিল বাউল আর মুর্শেদী গান
একসঙ্গে তুলেছিল হেমন্তের সোনালি ফসল
একসঙ্গে গড়েছিল গ্রামের যাত্রা-নাট্যদল


তোমার আজান গান স্নিগ্ধ সকালের মত শান্ত
আল্লার তোফা তুমি, কেন তবে হয়ে গেলে ক্লান্ত
এখনও অনেক পথ, অনেক লড়াই আছে বাকি
সেদিনও তোমাকে চাই, আজানের গান শোনাবে কি?