কখনও মনে হয় আমার দু’চোখ
আর খুলছে না, খোনা যাচ্ছে না
কেউ যেন চেপে ধরে আছে
অবসাদ ঘিরে ফেলছে। ঘুম
নামছে চোখে – উপশিরায়
শিরা বেয়ে মগজের কোষে
কোষ থেকে শিরদাঁড়া বেয়ে
শেকড় ছড়াচ্ছে মাটির গভীরে


বহু চেষ্টায় একটু চোখ খুলে
দেখি, সবুজে সবুজ আঁখিপল্লব
হাজারও সবুজ পাতার ঝোপ
পাতায় পাতায় বনানীর ডাক
প্রতি পল্লব পাতা হয়ে গেছে
সবুজের দীর্ঘ অভিযান যেন
চেতনার আকাশপট জুড়ে।
ধমনীতে ক্লোরোফিলের গন্ধ
ক্লোরোফিলের স্রোত নামছে
রোদে সেই পাতায় পাতায়
গাছেদের তৃপ্ত মহাভোজ।


এই সুযোগে, পকেটকে কোটর ঠাউরে
বাসা বেঁধেছে গুবরে পোকা
আর কাঠঠোকরা দম্পতি।
মাথার চুলে বাসা বেঁধেছে
বাবুই, শ্যামা, টিয়া, শালিখ –
হাতের চামড়া গাছের ছাল
আঙ্গুলের ডালে নাচ দেখাচ্ছে
নাম-না-জানা অজস্র পাখী
তাঁদের সুরে বসন্ত বৈশাখী


এমনটাও হয় নাকি!
মানুষ কি গাছ হয়? গাছ-মানুষ?
পায়ের আঙ্গুল বদলে হয় শেকড়?
শেকড় ছোঁয় যাবতীয় খনিজ
ও ভূগর্ভের প্রচণ্ড উত্তাপ
আমার মাথায় মেঘ-চুম্বন
মাথায় জমছে বরফ, হিম
জমে হিমশৈল, হিমানীপাত্র


নাগরিক জীবনের ক্লেদ ভুলে
আবিশ্বপ্রাণ নৃত্যবাসরে
বনভূমির আদিম নির্জনতায়
আমি আশিরনখর পাল্টাই
আমি
সচেতনে চেতনা হারাই।


(ভূমধ্যসাগর, ডিসেম্বর ২০০৮)